বিভেদ ভুলে কামরানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ সিলেট আ. লীগ





সিলেট সিটির আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ চার নেতা। দলীয় প্রতীকে এবারের নির্বাচন হওয়ায় নেতাদের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল। চার জনের মধ্যে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বেশ দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।পরে দলীয় সভাপতি ও প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নাম প্রস্তাব করলে তিনি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দলের প্রধানের এই সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেন। বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন বলে জানান সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা।



জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘প্রথমে বর্ধিত সভা ডেকে সিলেটেই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যাই। সিলেট আওয়ামী লীগে ঐক্য ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শে সিলেট থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা মনোনয়নবোর্ড ও দলের সভাপতির কাছে পাঠানো হয়। তবে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে মনোনয়ন দেওয়ায় সব বিভেদ দূর হয়ে গেছে।’
জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন-প্রত্যাশী ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদ আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার, অধ্যাপক জাকির হোসেন এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থন বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের প্রতি থাকলেও মনোনয়ন-প্রত্যাশী অন্য প্রার্থীরা তা প্রথমে মেনে নেননি। এ কারণে বর্ধিত সভার পর গত ১৮ জনু রাতেই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সিলেটের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম পাঠানো হয়।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘আমি মনে করি, সিলেটের জনগণ ও দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাওয়া পূর্ণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট আওয়ামী লীগ সবসময় ঐক্যবদ্ধ ছিল এবং এখনও আছে।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে আরও যে চারজন মনোননয়ন চেয়েছিলেন, তারা আপনার সঙ্গে থাকবেন কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে কামরান বলেন, ‘দলের বাইরে মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা আমার ভাই। তারা অতীতেও আমার জন্য অনেক করেছেন। তাদের নিয়েই এবার নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবো।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দলের হয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন চেয়েছি। তাই বলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনও কার্যক্রম চলবে না। দল থেকে কামরানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখন তাকে বিজয়ী করতেই আমাদের সার্বিক প্রচেষ্টা থাকবে। সিলেট আওয়ামী লীগ আগের তুলনায় অনকে বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ।’
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই দল থেকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তবে মনোনয়ন না পেলেও মনে কোনও আপসোস নেই। দল সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কামরানকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। এজন্য দলের সভাপতি আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে নৌকার বিজয় হবেই।’