নির্বাচনি প্রচারে সরগরম সিলেট

প্রচার চালাচ্ছেন আরিফুল হকনির্বাচনি প্রচারে এখন সরগরম সিলেট নগরী। আগামী ৩০ জুলাই সিটি নির্বাচন হবে। সেই হিসেবে ভোটের বাকি মাত্র ১৪ দিন। ঘরে, অফিসে, চায়ের দোকানে সর্বত্রই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে। লড়াইয়ে কে এগিয়ে, কার জন্য কে আশীর্বাদ, কার ভোটব্যাংকে কত জমা—এমন আরও কত বিষয়ে চলছে আলোচনা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেনের নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়া।

অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেটে রাজনৈতিক উত্তাপ বেশি। এরই মধ্যে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও জামায়াতের প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের একের অন্যের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন।

প্রচার চালাচ্ছেন আরিফুল হকনির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রার্থীরা যাতে আচরণবিধি মেনে প্রচার চালান এ ব্যাপারে তারা কড়া নির্দেশ দিয়েছে। প্রার্থীদের আচরণবিধি তদারকে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে কাজ করছেন।

বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা আশঙ্কা করছি সিলেটে সরকার ভোট কারচুপির বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে। তবে এই পরকিল্পনা পুণ্যভূমি সিলেটে প্রতিহত করবে ভোটাররা।’

প্রচার চালাচ্ছেন কামরানআওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরান বলেন, ‘জাতির জনকের কন্যা নৌকা প্রতীক আমাকে আমানত হিসেবে দিয়েছেন। আমি সেই আমানতের মর্যাদা রেখে সিলেট সিটিতে নৌকা প্রতীকের বিজয় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই। সিলেট হচ্ছে আধ্যাত্মিক, পর্যটন ও প্রবাসী অধ্যুষিত নগরী। এই নগরীর উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবো।’

মেয়র পদে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নৌকা ও ধানের শীষ নিয়ে মুখোমুখি। ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে সিপিবি-বাসদ এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থীও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন। বাকি তিনজন লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রতীকে। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির বিদ্রোহী বদরুজ্জামান সেলিম, জামায়াতের এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিপিবি-বাসদের কমরেড আবু জাফর, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন ও স্বতন্ত্র এহসানুল হক তাহের এখন নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

প্রচার চালাচ্ছেন কামরানপ্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ ও কুশল বিনিময় করছেন। ভোটারের মন জয়ে তারা দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১২৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৬২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীও যার যার ওয়ার্ডে প্রচার চালাচ্ছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা নগর। মাইকিংও করা হচ্ছে।

প্রার্থী, তাদের সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, ভোট উৎসব বেশ আগেভাগেই জমেছে। নির্বাচনের আলোচনাই এখন ‘টক অব দ্য সিটি’। নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। তবে কেউ কেউ বলছেন, ভোট নিয়ে চাপা উত্তেজনাও আছে। রয়েছে কিছু উদ্বেগ-আশঙ্কাও। তবে সব ছাপিয়ে সিলেট এখন ভোটের নগরী।

সিলেটে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটের সার্বিক নির্বাচনি পরিস্থিতি অত্যন্ত সুন্দর। এ সিটিতে শতভাগ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কোথাও কোনও অনিয়মের আশঙ্কা নেই। প্রার্থীরা নিয়ম মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। কোথাও কোনও ঝামেলা হচ্ছে না। নিরাপত্তার স্বার্থে সিলেট সিটি নির্বাচনে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনী মোতায়েন করা হবে। প্রয়োজন হলে অন্য ফোর্সও  মোতায়েন করা হবে। আমার বিশ্বাস, যে ফোর্স আমরা মোতায়েন করছি তা প্রয়োজনের চেয়ে বেশিই।’