সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ১৫০০ টাকার ভর্তি ফি ৩০০০

একাদশে ভর্তিতে উপজেলা-মফস্বল পর্যায়ে সরকার ১৫০০ টাকা নির্ধারণ করলেও হবিগঞ্জের কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কলেজে ভর্তিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মনগড়া ভর্তি বাণিজ্যের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নীতিমালা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেশন চার্জ ও ভর্তি হিসেবে উপজেলা-মফস্বল পর্যায়ে ১৫০০ টাকা নেওয়া যাবে। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ কোনোভাবেই উন্নয়ন ফি নিতে পারবে না। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে দ্বিগুণ ভর্তি ফি গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে হবিগঞ্জের বিভিন্ন কলেজের বিরুদ্ধে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলার রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি ফি হিসেবে ৩০০০, নবীগঞ্জ সরকারি কলেজে ২৫০০, আউশকান্দি র.প. উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে ২৫০০, ইনাতগঞ্জ কলেজে ২৫০০ ও দিনারপুর কলেজে ২০০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

রাসেল নামে এক ভর্তিচ্ছুর অভিভাবক বলেন, ‘কৃষিকাজ করি, আর খুব কষ্ট করে সন্তানকে পড়াচ্ছি। এরমধ্যে করোনায় একেবারে আমরা বিপর্যস্ত। উপজেলার পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হতে ৩০০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এতে অভিভাবক হিসেবে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

সাফিয়া নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘খুব কষ্টে সন্তানের পড়ালেখা অব্যাহত রেখেছি। কলেজে ফি বেশি হওয়ায় এখনও ভর্তি করাতে পারিনি।’

রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ

হাবিবুর রহমান চৌধুরী শামীম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘নবীগঞ্জ সরকারি কলেজে ২৫০০ টাকা দিয়ে ভর্তি করিয়েছি। ফি-টা খুব বেশি মনে হচ্ছে।’

যোগাযোগ করা হলে রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল হক সগৌরবে অতিরিক্ত ফি আদায়ের কথা স্বীকার করেন। বলেন, ‘ভর্তি ফির বিষয়টি খুবই সিক্রেট, বলা যাবে না। আমরা খুব বেশি নিতেছি।’ কেন অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছাদেক হোসেন বলেন, ‘সরকারি নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত ফি আদায়ের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে, এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হলে বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অনিক ও আপিল কর্মকর্তা ড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’