‘দায়িত্বশীলরা সময়মতো কাজ করেন না, সুযোগ পেলে পকেট ভারী করেন’

মহামারি করোনাভাইরাসে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ায় ব্যাপক ঘাটতি হয়েছে। এ শিখনঘাটতির কারণে পুষিয়ে না নিতে পারায় কোভিড-১৯ পরবর্তী ২০২২ সালে অষ্টম শ্রেণির ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাসই করতে পারেনি। আর নবম শ্রেণিতে পাস করতে পারেনি ২৬ দশমিক ২ শতাংশ।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২২’ সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

এ সময় গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক শিক্ষাবিদ রাশেদা কে. চৌধূরী, গবেষণা দলের পক্ষে এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউটের গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ এবং এডুকেশন ওয়াচের উপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ব্যবস্থাপক, শিক্ষক, অভিভাক─তারা শিখন নয়, পরীক্ষায় পাস করাকে ভালো মনে করেন। এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শিখন বলতে বোঝায় তিনটা জিনিস─বুঝে পড়া, চিন্তা করার শক্তি ও প্রশ্ন করার শক্তি। এটা আমাদের দেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কোথাও নেই।

মনিটরিং হলো বড় সমস্যা উল্লেক করে তিনি বলেন, একজন শিক্ষা কর্মকর্তা থাকেন, নাগরিক সমাজকে এতে সম্পৃক্ত করা দরকার, কিন্তু এতে অনিহা দেখা যায়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা নিজেকে সবজান্তা মনে করেন। তাদের অন্যের প্রতি অনিহা আছে। বাংলাদেশে নীতি-আইনের সংকট নেই। অনেক নীতি আছে। কিন্তু সংকট হলো এর বাস্তবায়ন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা বাস্তবায়নের কথা বলে থাকেন কিন্তু সময়মতো কাজ করেন না। সমন্বয় সংকট কিন্তু কাজ করেন না। সুযোগ থাকলে নিজেদের পকেট ভারী করেন। এগুলো থেকে বেরোতে হবে। সে জন্য সামাজিক পরিবর্তন দরকার।

কোচিং-গাইড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষকের মধ্যে এই প্রবণতা আছে যে তারা নোটবুক লেখায় ব্যস্ত থাকেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের তিনটি বিষয়ের ওপর নেওয়া পরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে এ তথ্য প্রকাশ করে। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের ওপর ৯০ মিনিটের পরীক্ষা নেওয়া নেয় সংস্থাটি। শিক্ষকরা এ পরীক্ষা মূল্যায়ন করেছেন। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী বাছাই করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলেনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের ফোকাল পয়েন্ট ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ গবেষণার সার্বিক কাজ করা হয়। একই বছরের অক্টোবরে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়।