এটা ৯ জানুয়ারির খবর। তবে আজ (১৬ জানুয়ারি) দুপুর নাগাদ জানা গেল, ছবিটি আপাতত ছাড়পত্র পাচ্ছে না। স্থগিত করা হয়েছে সেন্সর বোর্ডের পুরনো সিদ্ধান্ত। এক বোর্ড সদস্য তো বাংলা ট্রিবিউনকে সরাসরি বলে দিলেন, ‘ছবিটি ব্যান করা হলো!’
অর্থাৎ শেষ মুহূর্তে এসে ছবিটির ছাড়পত্র আটকে দেওয়া হয়েছে। কারণ, প্রচলিত রয়েছে যে ছবিটি নির্মিত হয়েছে ২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিজানে ঘটা নির্মম সন্ত্রাসী হামলার ছায়া ধরে! বিষয়টি ফারুকী সরাসরি স্বীকার না করলেও, দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে এমনটাই প্রকাশ পেয়ে আসছে এক বছর ধরে।
তবে শুধু এই কারণে, নাকি আরও কিছু কারণ রয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া যায়নি এখনও। ছাড়পত্রে স্বাক্ষর করতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে ঠিক কী কারণে আটকে গেল ছবিটি, তা নিয়ে সরাসরি কথা বলছেন না বোর্ড সদস্যরা।
বিষয়টি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের জ্যেষ্ঠ সদস্য ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছবিটি শেষ মুহূর্তে ব্যান করা হয়েছে। আমি এখন আরও একটি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী দেখছি। পরে কথা বলতে পারব।’
হলি আর্টিজানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ছবিটি নির্মাণ করেছেন ফারুকী- এমন ধারণা থেকেই কি স্থগিত করা হলো? জানতে চাইলে গুলজার বলেন, ‘ছবিটিতে সেই হামলার ইঙ্গিত তো আছেই। বাড়তি সতর্কতার জন্যই আপাতত ছবিটির ছাড়পত্র স্থগিত করা হয়েছে।’
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া ও সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা এটির ছাড়পত্রের বিষয়ে জানিয়েছিলেন বাংলা ট্রিবিউনকে। তবে আজ (১৬ জানুয়ারি) ছাড়পত্র স্থগিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করার পর ছবিটির অন্যতম প্রযোজক আবদুল আজিজকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নতুন এ ছবিতে কাজ করছেন ফিলিস্তিনের অভিনেতা ইয়াদ হুরানি। সঙ্গে বরাবরের মতো স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা তো আছেনই। এতে একেবারে ভিন্ন গেটআপে আসছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান। থাকছেন নন্দিত নাট্যজন মামুনুর রশীদ, কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ছবিটির মহড়া শুরু হয়। আর শুটিং শুরু হয় ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি, ঢাকার কোক স্টুডিওতে।
ছবিটি বাংলাদেশ থেকে প্রযোজনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ছবিয়াল, আরও আছেন ভারতের শ্যাম সুন্দর দে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, ১ ভারতীয় ও ২ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হন। রাতভর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার পরদিন (শনিবার) সকালে সেনাবাহিনীর 'অপারেশন থান্ডার বোল্ট’র মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটে। পরে সেখান থেকে পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার হয়। আর সাইফুলের সহকারী জাকির হোসেন শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
প্রসঙ্গত, ‘ডুব’ ছবিটি নিয়েও অনেকটা এমন সেন্সর জটিলতায় পড়েন নির্মাতা ফারুকী। কারণও একই, অনুমোদনহীন বিতর্কিত গল্প।