হ্যাকারের কল্যাণে ফেসবুক ভেরিফায়েড!

আশনা হাবিব ভাবনা‘প্রচণ্ড মাথাব্যথায় শুটিং!! তবুও আমি হাসতে পারি।’
১১ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ছ’টার দিকে ফেসবুক দেয়ালে এই পোস্ট দেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। স্বাভাবিক নিয়মেই সঙ্গে ছিল একটি হাসির ক্লোজআপ।
মূলত এর পরই সেদিনের কোনও একটা সময় হাতছাড়া হয়ে যায় ভাবনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। সারাদিন শুটিংয়ে ব্যস্ত, মাথাটাও ব্যথা- তাই দিনে আর ঢুঁ মারা হয়নি ফেসবুক দেয়ালে। রাতে বাসায় ফিরে টের পেলেন বিষয়টা, যখন চেষ্টা করলেন ফেসবুকে ঢোকার। মেইল খুলে দেখলেন অনেকগুলো সিকিউরিটি অ্যালার্ম নোটিশ। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, অ্যাকাউন্টটি তারা ডিজেবল করে দিয়েছে!
তখনকার অনুভূতি প্রসঙ্গে ভাবনা বললেন এইভাবে, ‘‘এই পরিস্থিতির পর মনে হলো, আমি বুঝি হঠাৎ কোনও কূপের অতল অন্ধকারে তলিয়ে গেলাম! জানতে পারলাম, আমার অ্যাকাউন্ট বার বার হ্যাক করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি হ্যাকার। এমন অস্বাভাবিক চেষ্টা টের পেয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ পুরো অ্যাকাউন্টটাই বন্ধ করে দিলো! অথচ এখানে আমার কত ছবি, কত স্মৃতি। চলছে বইমেলা। আমার উপন্যাস ‘তারা’র প্রচারণা। সব শেষ!’’
পরদিন ভাবনা যোগাযোগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে। তাদের সহযোগিতায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় ভাবনার ছবি, পরিচয়পত্র, বায়োগ্রাফি ইত্যাদি।
ভাবনা বললেন, ‘এগুলো করার পরেও মনটা খুব খারাপ ছিলো। কারণ, সবাই বলছিলো- এসব অ্যাকাউন্ট সচরাচর ফেরত পাওয়া যায় না। পেলেও মাস দুই তিনেক তো লাগবেই।’
এমন শঙ্কা উবে গেল ঠিক ১০ দিনের মাথায়। ২১ ফেব্রুয়ারি ভাবনা একটি ইমেইল বার্তা পেলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে। অর্থাৎ সব তথ্য-প্রমাণ পরীক্ষা করে তারা ভাবনার প্রোফাইলটি ফেরত দিলো। ফেরত দিয়েই এই গল্পের ইতি ঘটেনি। বোনাস হিসেবে ভাবনা পেলেন নীল চিহ্নের তকমাটাও! যা যে কোনও ফেসবুক ইউজারের কাছে কাঙ্ক্ষিত।
আশনা হাবিব ভাবনাভাবনা বলেন, ‘আমি সত্যিই মুগ্ধ ও বিস্মিত! এত দ্রুত এটি ফেরত পাবো, সঙ্গে ভেরিফায়েডও! কারণ, আমি তো অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করার জন্য কোনও আবেদন করিনি। আমি শুধু অ্যাকাউন্টটা ফেরত চেয়েছি। প্রমাণ হিসেবে পাসপোর্টের কপিটা দিয়েছি। অথচ ওরা আমাকে চমকে দিলো। নামের পাশে নীল চিহ্নটা দেখে বিশ্বজয়ের আনন্দ পেয়েছি।’
ভাবনা আরও যোগ করলেন, ‘ভেরিফায়েড করতে হলে নাকি ডলার লাগে, অনেক কিছু প্রমাণ করতে হয়। এভাবেই করছে সবাই। এসব শুনে ভেরিফায়েড করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাই এসব নিয়ে আবেদন করিনি কখনও। অথচ হ্যাকারদের কল্যাণে আমি ভেরিফায়েড হয়ে গেলাম! মজা না?’

এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি নীল চিহ্ন নিয়ে অ্যাকাউন্ট ফিরে পাবার পর ভাবনার ফেসবুকে চলছে ‘তারা’ উৎসব। এটি তার লেখা প্রথম উপন্যাস। যা প্রকাশ করেছে তাম্রলিপি প্রকাশনী।বইমেলায় ভক্তদের সঙ্গে ভাবনা