আমরা প্রত্যেকেই ঘটনাচক্রে ‘অসমাপ্ত’ থেকে যাই: প্রিয়াঙ্কা

অভিনয়ের পাশাপাশি ক্যারিশমাটিক ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধি এবং হাস্যরস দিয়ে অন্যদের চেয়ে ঢের আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। বলিউড-হলিউড দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই সমানতালে এগিয়ে চলা এ অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন, পরিবর্তনই জীবনের একমাত্র ধ্রুবক। বিয়ের ক্ষেত্রেও এ টোটকা নাকি কাজ করেছে বেশ। কয়েকদিন আগেই প্রিয়াঙ্কার বই ‘আনফিনিশড’ প্রকাশ হলো। বিয়ের পর এই প্রথম তিনি নিজের ব্যক্তি ও কর্মজীবন নিয়ে কোনও সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: বইটি কীভাবে আপনাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সাহায্য করেছে?

প্রিয়াঙ্কা: আমি এমন কেউ নই যে আমার জীবনের সব কথা কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেবো। আমি চাইলেই অনেক বিষয় এড়িয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু এটা মনে হয়েছিল আমার সম্পর্কে এত কিছু যে লেখা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলা দরকার।

আমি শুধু চেয়েছিলাম মানুষ আমাকে জানুক। তারা বুঝুক আমার সত্য কী। আমার সংস্কৃতি এবং কাজের প্রতি নৈতিকতা- সবই প্রকৃতপক্ষে সংজ্ঞায়িত করেছে যে আমি আসলে কে।

প্রশ্ন: বইটার নাম ‘আনফিনিশড’ (অসমাপ্ত) কেন?

প্রিয়াঙ্কা: আমি মনে করি আমরা প্রত্যেকেই ঘটনাচক্রে ‘অসমাপ্ত’ থেকে যাই। আমাদের সব কাজ সবসময় চলমানই থাকে। নিজের সব কিছু একদিন বা একটা সময় শেষ করে ফেলবো, এমনটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।

প্রশ্ন: জীবনে বিচিত্র সব মোড় নিয়েছেন। এ পথযাত্রা মসৃণ রাখতে কী আপনাকে বেশি সাহায্য করেছে?

প্রিয়াঙ্কা: আমার পরিবার। পরিবারই আমাকে একটা জিনিস শিখিয়েছে- কিছুই তোমাকে ভাঙতে পারবে না। যেকোনও ধরনের ব্যর্থতার পর যখন পরিবারের কাছে এসে বলি, সব ভেস্তে গেছে, তখন আমার মা-বাবাসহ অন্য সবাই আমার পক্ষেই থাকে। আর ওরাই আমাকে কর্মঠ রেখেছে।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়াপ্রশ্ন: বইটি লেখার আগে আপনি কি নিজের কোনও দিক বা বিশেষত্ব নতুন করে আবিষ্কার করেছেন?

প্রিয়াঙ্কা: আমি প্রথম যখন পাণ্ডুলিপিটা পড়লাম, তখন নিজের আবেগকে সামাল দিতে পারিনি। কারণ আজকের এই অবস্থানে আসতে আমাকে অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে। এখন আমি যেখানে আছি সেখানে সান্ত্বনা, তৃপ্তির অনুভূতি, শান্তির অনুভূতি খুঁজে নেওয়ার সময় এসেছে। আমি আমার নিজের নৈপুণ্যেও আত্মবিশ্বাসী।

প্রশ্ন: হতে চেয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, হয়ে গেলেন মিস ইন্ডিয়া, মিস ওয়ার্ল্ড, বলিউড-হলিউড তারকা এবং কণ্ঠশিল্পী। নিয়তিতে বিশ্বাস করেন?

প্রিয়াঙ্কা: আমি নিয়তি ও কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাস করি। আমি মনে করি এমন একটা দরজা আছে যা আপনার জন্যই নির্ধারিত। এটি আসলেই একজন ব্যক্তির চরিত্র যা তাদেরকে সুযোগ বুঝতে ও কাজে লাগাতে এবং এর জন্য কতটা কঠোর পরিশ্রম করতে হবে তা বুঝতে দেয়।

আমি মনে করি এটি এক ধরনের মানসিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি বিশ্বাস করি আমাদের মাইলফলকগুলো পূর্বনির্ধারিত। তবে আপনার ব্যক্তিত্ব ও সামর্থ্য কেমন তা আপনার ওপরই নির্ভর করে।

প্রশ্ন: বলেছেন যে আত্মবিশ্বাস এমন কিছু নয় যা অন্তর্নিহিত, এটা তৈরি করে নিতে হয়। আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা কতটা কঠিন?

প্রিয়াঙ্কা: আত্মবিশ্বাসটা আমার কাছে অনেকটা পেশীর মতো। আপনি যখন কিছু অনুশীলন করেন, তখন তাতে আপনি আরেকটু দক্ষ হয়ে যান। আত্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রেও তাই। এটা নিয়ে কেউ জন্ম নেয় না। আপনার পরিস্থিতি একে সংজ্ঞায়িত করে। পরিবেশ ও আপনার ব্যক্তিত্বও একে সংজ্ঞায়িত করে।

সবসময় আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন হয় না। আমি আজ আপনার সঙ্গে আলাপ করছি, এখানে আমরা শুধু দুজন কথা বলছি। এখন আমার এটা ভাবার দরকার নেই যে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু এমন কিছু সময় আছে যেখানে এমনটা আপনাকে ভাবতে হবে। যখন আপনি একটি কক্ষে হাঁটছেন এবং মনে করছেন যে আপনি অনিরাপদ, তখনই আপনাকে সেই আত্মবিশ্বাস খুঁজে বের করতে হবে।প্রিয়াঙ্কা চোপড়া