একুশের একাত্তর। ১৯৫২ থেকে ২০২৩, রাষ্ট্র ও মাতৃভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি প্রাপ্তির একাত্তর বছর পূর্ণ হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও মর্যাদা লাভ করেছে বাংলা ভাষা। তাই প্রতি বছরের মতো আজও (২১ ফেব্রুয়ারি) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বিশেষ এই দিনে তারকাদের ভাষা ভাবনা ও অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করেছে বাংলা ট্রিবিউন। এ পর্বে জানুন অভিনেত্রী সালহা খানম নাদিয়ার গল্প...
পর্দায় বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে দেখা যায় নাদিয়াকে। কিন্তু তার স্বাচ্ছন্দ্য কোন ভাষায়? অভিনেত্রী বললেন, ‘আমি বরিশাল, পাবনা, কুষ্টিয়া, ঢাকাইয়া (যে ভাষায় কথা বলতে বলতে বড় হয়েছি) এসব ভাষায় কথা বলতে পারি এবং সব ভাষাতেই কাজ করতে ভালো লাগে। যেহেতু এগুলো শিখে ফেলেছি, আর ভাষাগুলো শুনতেও তো চমৎকার। তাই সবগুলো ভাষাই ভালো লাগে। আর আমার ইচ্ছে আছে, চট্টগ্রাম ও সিলেটের ভাষায় কথা বলার।’
দর্শক হিসেবে কোন ভাষায় আরাম খুঁজে পান নাদিয়া, সেটাও জানালেন প্রাসঙ্গিকভাবে। তার ভাষ্য, ‘বাংলা বেশি বুঝতে পারি এবং আরাম লাগে। এ কারণে দেশের পাশাপাশি কলকাতার সিনেমাগুলোও ভালো লাগে। হিন্দি অনেক কিছু আছে, যেটা বুঝিও না। আর বিদেশি অন্যান্য ভাষাগুলো শুনতে শুনতে বা দেখতে দেখতে বুঝি কিংবা মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করে তারপর বুঝতে হয়। কিন্তু বাংলা সিনেমার জন্য কিন্তু সাবটাইটেল পড়তে হয় না। সবকিছু সহজেই বোঝা যায়। নিজের ভাষা তো তাই।’
নাটকে আঞ্চলিক ভাষার আধিক্য কিংবা অপপ্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনা আছে। সে বিষয়ে নাদিয়ার পর্যবেক্ষণ হলো, ‘নির্মাতারা যেভাবে গল্প ভাবছেন, সেভাবে বানাচ্ছেন। কিন্তু সব নাটকেই যদি একইভাবে বানায়, তাহলে তো ঝামেলা। সব ধরণের ভাষায় চেষ্টা করা উচিত। যেমন কেউ যদি শুধু নোয়াখালীর ভাষাতেই বানাতে থাকে, তাহলে তো তার সৃষ্টিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়। আমি যদিও এসব বিষয়ে এতো শিক্ষিত না। তবে ব্যক্তিগত অনুভূতি বা ভাবনা থেকেই বলছি, সব ভাষাতেই বানানো উচিত। আমার তো ইচ্ছে আছে, যদি কখনও নির্মাতা হতে পারি, তাহলে এমন একটা নাটক বানাবো, যেখানে সব রকম ভাষার চরিত্র থাকবে। যেমন আমরা একটি বিল্ডিংয়ে থাকি, সেখানে কত রকম ভাষার মানুষ বসবাস করেন। তো এরকম হলে মজাই লাগতো।’
ভাষা নিয়ে একটি মজার ঘটনাও জানালেন নাদিয়া। যেটা ঘটেছে ভারতের দার্জিলিংয়ে, শুটিং করতে গিয়ে। অভিনেত্রী বলেন, “টানা দশদিন শুটিং করেছিলাম। সেখানে আমরা টুকটাক হিন্দি, ইংরেজিতে মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কিন্তু সাজু খাদেম ভাই বলেন, ‘আমি তো হিন্দি পারি না। বাংলাতেই বলবো, দেখি দার্জিলিংয়ের মানুষ বোঝে কিনা।’ তিনি পুরো শুটিংয়ের সময়টাতে বাংলায় কথা বলেছেন। আর ওখানকার মানুষও বুঝতে পেরেছিলো। তখন তিনি আমাদের বলেন, ‘তোমরা কেন অযথা হিন্দিতে কথা বলছো। ওরা তো বাংলা বুঝতে পারে।’ এরপর পুরো ট্রিপে আমরা বাংলাতেই কথা বলেছি। ওই শুটিং সফরটা বেশ মজার ছিলো।”
ভাষা বিষয়ক আলাপ শেষে দুটো নতুন নাটকের খবরও দিলেন নাদিয়া। জানালেন, দুটি ধারবাহিক নাটকের শুটিং রয়েছে তার হাতে। একটি হলো সোহেল তালুকদারের পরিচালনায় ‘মায়া’; যেখানে তার সহশিল্পী হিসেবে আছেন সালমান আরাফাত, আব্দুল্লাহ রানা, মনিরা মিঠু প্রমুখ। আরেকটি নাটক অর্ক মোস্তফার নির্মাণে ‘সুইট হোম’। এখানে আছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, ইমতিয়াজ বর্ষণসহ অনেকে।