তুষির একান্ত ফটোগ্রাফার কে এই নিরাকার

দুটি সিনেমা, দুটি ওয়েব সিরিজ; নাজিফা তুষির ক্যারিয়ার বলতে এটুকু। তবে ‘হাওয়া’ সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে তিনি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। ছবির একমাত্র এবং রহস্যময়ী নারী চরিত্রে অভিনয় করে তাক লাগিয়েছেন। যদিও এরপর তার কর্মব্যস্ত সময় পার করার কথা, কিন্তু অদ্ভুত নীরবতায় ডুব দিয়ে আছেন এ অমিতসম্ভাবনাময়ী।

এই নীরব সময়ের পুরোটাই নিজেকে দিচ্ছেন তুষি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন দিগ্বিদিক। আর সেসব ভ্রমণের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করছেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। কখনও নীল সমুদ্রে, কখনও আলোয় ঘেরা নগরে দেখা মিলছে তুষির। কিন্তু প্রতিটি ফ্রেম কিংবা উদযাপনে তিনি একা!

এ নিয়ে প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে নাজিফা তুষির ছবিগুলো তুলছে কে? তার এই বিশেষ সফরগুলোর সঙ্গী কে বা কারা? দুই দুই চার মিলিয়ে সেই উত্তরের কিছুটা কিনারা পাওয়া গেলো।

গত অক্টোবর থেকে তার এসব আনন্দছবির ফটোগ্রাফারের নামের জায়গায় ‘নিরাকার’ লিখে আসছেন তুষি। গত দুদিনে নতুন সফরের বেশ কিছু ছবিতে বিষয়টি নজর কেড়েছে আরও। অর্থাৎ যিনি ছবিগুলো তুষিকে তুলে দিচ্ছেন, তাকে ‘নিরাকার’ নামে সম্বোধন করছেন লাস্যময়ী। কিন্তু কে এই ‘নিরাকার’? একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছে, তুষির বিশেষ সেই ফটোগ্রাফার আসলে নিরাকার নন। তিনি আকারসমৃদ্ধ গুণী নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন। যিনি তুষিকে নিয়ে ‘হাওয়া’ বানিয়ে এখন প্রেমের হাওয়ায় ভাসছেন।

এ বিষয়ে তুষির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উড়িয়ে দেন সূত্র কিংবা লুকিং গ্লাসের গুঞ্জন। বলেন, ‘হাস্যকর। ভুল ভাবছেন।’ তবে সঠিক ভাবনা কি হতে পারে, তেমন কোনও দিকনির্দেশনা দেননি তুষি। পাল্টা প্রশ্ন ছিলো, তাহলে কে এই নিরাকার? জবাবে তুষি বললেন, ‘আমার ভাই’!

পাল্টা প্রশ্ন উঠতেই পারে, ছবিগুলোর লোকেশন ও এক্সপ্রেশন কি তাই বলে?

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, অনেক দিন ধরেই প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন তুষি ও সুমন। ব্যক্তিগত সম্পর্ককে একান্ত নিজেদের মধ্যে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা। সেজন্য বিষয়টি সামনে আনতে চাইছেন না তারা।

সূত্রের কথার আবছা প্রমাণও মিলল নাজিফা তুষির একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে। গত ২৮ ডিসেম্বর ইনস্টা হ্যান্ডেলে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন অভিনেত্রী। সেটা দেখে আঁচ করা যায়, এটি কোনও প্রমোদতরীতে ধারণ করা। ছবিতে তরীর একটি লুকিং গ্লাসের সুবাদে আকার মিলেছে নিরাকার ফটোগ্রাফারের! জুম করলে অনেকটাই স্পষ্ট, তিনি আসলে মেজবাউর রহমান সুমন। যিনি আসলে সারাক্ষণ ব্যস্ত তুষির মুহূর্তধারণে। আর বরাবরের মতো সুমন-সমৃদ্ধ সেই ছবির কৃতিত্বও দেওয়া হয়েছে ‘নিরাকার’কে।

যদিও সূত্র বলছে, ছবিগুলো অনেকটা ভুল করেই আপলোড করেছেন তুষি। লুকিং গ্লাসে যে ফটোগ্রাফারকে দেখা যায়, সেটি খেয়াল না করার ফসল এটি।  

২৮ ডিসেম্বর আরও কিছু ছবি শেয়ার করেছেন তুষি। যেগুলোতে দেখা যায়, সমুদ্রতীরের কোনও বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করছেন তিনি। সেই কক্ষের বারান্দায় উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিমায় ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন। এই ছবিগুলোও তুলে দিয়েছেন ‘নিরাকার’।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাইতে মুক্তি পায় মেজবাউর রহমান সুমন নির্মিত ‘হাওয়া’ সিনেমাটি। এটি ওই বছর তথা ঢালিউডের অন্যতম আলোচিত ও সফল সিনেমা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে। এ ছবিতে গুলতি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তুষি। এছাড়াও আছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ। 

বর্তমানে সুমনের হাতে রয়েছে ‘রইদ’ নামের একটি ছবির কাজ। নতুন বছরে এর শুটিং শুরু হবে বলে জানা গেছে। তবে এতে কারা অভিনয় করবেন, সেটা প্রকাশ করেননি নির্মাতা। এমনও হতে পারে, ‘রইদ’-এর লোকেশন বাছাই আর শুটিং পরিকল্পনা করতেই ঘর ছেড়ে পৃথিবীর বুকে বেরিয়ে পড়েছেন নিরাকার ও হাওয়া যুগল! ধারণা করা হচ্ছে, সুমন-তুষি সম্প্রতি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। হতে পারে বছরের শেষ রজনী উদযাপন করেই ফিরবেন।

লুকিং গ্লাসে নিরাকারপ্রচলিত আছে, নাজিফা তুষির প্রথম ছবি রেদওয়ান রনি নির্মিত ‘আইসক্রিম’ সুবাদে প্রেমের গল্পে জড়ান সেই ছবির নায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে। সেখান থেকে ‘হাওয়া’ পর্যন্ত সেই প্রেমেই ছিলেন। তবে ‘হাওয়া’ মুক্তির পর থেকে নতুন প্রেমে জড়ান নির্মাতা সুমনের সঙ্গে।

লোকে বলে, তুষির প্রেমের যোগসূত্রটা তার স্থিরচিত্রের মতোই; ক্লাসিক।সুমন ও তুষি