X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াশায় ঢাকলো জয়ার ‘রইদ’, যা বললেন নির্মাতা

কামরুল ইসলাম
কামরুল ইসলাম
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:১০আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৮

তাপমাত্রা বাড়লেও আনুষ্ঠানিকভাবে শীত কাটেনি, তবু যেন কুয়াশায় ঢেকে গেলো প্রযোজক জয়া আহসানের সিনেমা ‘রইদ’ (রোদ)! বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই হতচকিত তারা, যারা জানতেন সরকারি অনুদানের ছবিটি সম্পর্কে।
২০২১ সালের ১৫ জুন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে চলচ্চিত্রে অনুদানের প্রজ্ঞাপন জারি হলো। তাতে অনেকের সঙ্গে পাওয়া গেলো বিশেষ দুটি নাম—মেজবাউর রহমান সুমন ও জয়া আহসান। ছবির নাম ‘রইদ’। প্রযোজনায় জয়া, নির্মাণে সুমন। এর জন্য ৬০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে সরকার। খবরটি সুখকর ছিল সিনেপ্রেমীদের জন্য। কারণ রুপালি পর্দায় অবিসংবাদিত তারকা হয়ে উঠেছেন জয়া। অন্যদিকে সুমনের নির্মাণে নির্ভার থাকে দর্শক-সমালোচক। ফলে দেশের সিনেমায় ‘রইদ’ যে নতুন আলো ছড়াবে, এমন বিশ্বাস জাগে অনেকের মনে।
কিন্তু সেই ‘রইদ’ কুয়াশা কেটে আসলে উঠবে কবে? পাক্কা তিনটা শীত পেরিয়ে গেছে। এখনও ভাসা ভাসা ঝাপসা ‘রইদ’। তবে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ছবিটি নিয়ে নতুন একটি তথ্য পাওয়া গেলো। জানা গেলো, এর প্রযোজনায় আর জয়া নেই। সেই সঙ্গে সরকারি অনুদানও ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। জয়ার সাড়া না পেয়ে পুরো বিষয়টি নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন কথা বলেছে মেজবাউর রহমান সুমনের সঙ্গে। ফাল্গুনের নরম রোদের দুপুরের সেই আলাপ প্রশ্ন-উত্তরে শোনা যাক...

বাংলা ট্রিবিউন: কুয়াশায় ঢেকেছে ‘রইদ’ কিংবা ছায়ায় সরে দাঁড়ালেন জয়া! ব্যাপারটা আসলে কী?

মেজবাউর রহমান সুমন: বিষয়টা সেরকম না। আসলে মাস কয়েক আগে জয়ার সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে সরকারি অনুদানটা ফেরত দেবো। কারণ নানা কারণে আমাদের কাজটা বিলম্ব হচ্ছে। কিন্তু অনুদানের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। সেগুলো ভাঙুক, তা নিয়ে সমালোচনা হোক, এসব আমরা চাই না। যেহেতু ছবিটার শুটিং কবে নাগাদ শুরু করবো, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাছাড়া অনুদানের টাকায় ছবিটার কাজ সম্ভবও না। তাই এসব অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা অনুদানটা ধরে রাখতে চাইনি।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন সূর্য থেকে তাহলে ‘রইদ’ ছড়াবে? মানে প্রযোজনার জায়গাটা যদি পরিষ্কার করতেন... 

মেজবাউর রহমান সুমন: ‘রইদ’ মূলত আমার প্রতিষ্ঠান ফেসকার্ডের ছবি। সরকারি অনুদানের সঙ্গে জয়াও যুক্ত হয়েছিল। এখন যেহেতু কাজটা পেছাচ্ছে, জয়া আমার ওপর বিষয়টা ছেড়ে দিয়েছে। দেখুন, সিনেমাটা আমার কাছে একটা আর্ট। কোনও বাণিজ্য না। এটা আমি নিজের মতো করেই বানাতে চাই। অনুদান নেওয়ার পর জয়ার ওপর যেমন একটা চাপ ছিল, নির্মাতা হিসেবে আমিও চাপ অনুভব করছিলাম। তাই অনুদান ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই মুহূর্তে প্রযোজক হিসেবে জয়া নেই। আমার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সহ-প্রযোজক হিসেবে অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ করছি। আশা করছি সেভাবেই কাজটি এগোবে। 

বাংলা ট্রিবিউন: অভিনয়েও কি জয়া থাকছেন না? 

মেজবাউর রহমান সুমন: জয়া থাকবে, এটা আমি কখনও কোথাও বলিনি। নিশ্চয়ই জয়াও কখনও বলেনি। ঘোষণার পর থেকে আমরা কাস্টিং নিয়ে কিছু বলিনি। এমনকি এখনও ছবির অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত নয়। আর কাস্টিং, লোকেশন, শুটিং কিছু নিয়েই আপাতত বলতে চাই না। সময় হলেই জানতে পারবে সবাই।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার মতো পরিচিত নির্মাতা অভিনয়শিল্পী খুঁজে পাচ্ছেন না! বিস্ময়কর নয় কি? 

মেজবাউর রহমান সুমন: আমি বলছি না দেশে ভালো অভিনয়শিল্পী নেই। অবশ্যই আছেন। কিন্তু আমি গল্পটাকে যেভাবে দেখি, সেভাবে তো শিল্পীকেও দেখতে হবে। একজন পাকা অভিনেতা হলেই তিনি যেকোনও চরিত্রে মানিয়ে যাবেন, এটা আমি মনে করি না। গল্পের সঙ্গে পুরোপুরি একাত্ম হতে পারবে, এমন কাউকে খুঁজছি।

মেজবাউর রহমান সুমন বাংলা ট্রিবিউন: এই যে সিনেমার কাজ হচ্ছে হচ্ছে করেও পেছাচ্ছে, ফাঁকা সময়টা তাহলে কাটছে কীভাবে? অন্য কোনও প্রজেক্টে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন বলছেন নাকি?
 
মেজবাউর রহমান সুমন: আমি তো মূলত বিজ্ঞাপন নির্মাতা। ওটাই বানাচ্ছি নিয়মিত। সিনেমা তো আমার প্রফেশন না। নিরেট ভালোলাগা থেকে বানাই। এটা আমার কাছে শিল্প। সুতরাং সিনেমা আমার নিজের মতো করে, যখন ইচ্ছে হবে, বানাবো। ‘রইদ’ আমার পরবর্তী সিনেমা, এটা কনফার্ম।

বাংলা ট্রিবিউন: জয়ার না থাকায় কিছু প্রশ্ন তো উঠতে পারে। এই যেমন বনিবনা না হওয়া, বন্ধুত্বে চিড় ধরা... 

মেজবাউর রহমান সুমন: জয়া আমার বন্ধু। আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ‘রইদ’ সিনেমার প্রযোজনা সেটার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। আমাদের মধ্যে এখনও বন্ধুত্ব আগের মতোই আছে। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই আমরা এই জায়গায় এসেছি। সুতরাং জয়া সরে গেছে, এর পেছনে বড় কোনও কারণ আছে, এগুলো ভাবার অবকাশ নেই।

বলা প্রয়োজন, মেজবাউর রহমান সুমন দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞাপন জগতে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। বানিয়েছেন বেশ কিছু দর্শকনন্দিত নাটক। ২০২২ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’। এটি দেশ ও দেশের বাইরে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছিল। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল প্রমুখ। সুমনের প্রতিষ্ঠান ফেসকার্ডের সঙ্গে এটি প্রযোজনা করেছিল সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচারস।

সুমনের আরেকটি উন্নত পরিচয়, তিনি দেশের অন্যতম ব্যান্ড ‘মেঘদল’র সদস্য। নিয়মিত সময় দিচ্ছেন সেখানেও। জয়া আহসান

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া
কোক স্টুডিও বাংলায় জয়া আহসান!
কোক স্টুডিও বাংলায় জয়া আহসান!
কলকাতার ফিল্মফেয়ারে ঢাকার বাজিমাত!
কলকাতার ফিল্মফেয়ারে ঢাকার বাজিমাত!
জয়াকে নিয়ে ‘জিম্মি’ বানাচ্ছেন নিপুণ
জয়াকে নিয়ে ‘জিম্মি’ বানাচ্ছেন নিপুণ
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু
বাংলা গানের উন্নয়ন ও বিকাশে ‘অংশীজন সভা’
বাংলা গানের উন্নয়ন ও বিকাশে ‘অংশীজন সভা’