সংগীতজ্ঞের ঘরে জন্ম তার। বেড়ে উঠেছেন শাস্ত্রীয়সংগীতের চর্চা করতে করতে। তাই গানের শুদ্ধতম পথেই নিজেকে মেলে ধরেছেন বাপ্পা মজুমদার। দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি কাজের ক্ষেত্রে কখনও আপোষ করেননি। গানের মধ্যে মানের দিকটা মেনে চলেছেন শক্তভাবে।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে মানহীন চটুল কনটেন্টে সয়লাব চারদিক। গানের ক্ষেত্রেও শর্টকাট, বিতর্কিত পথ বেছে নিচ্ছে প্রজন্মের অনেকে। যা দেখে হতাশা এবং ভয় কাজ করে বাপ্পার মনে। শনিবার (২৫ মে) সোশ্যাল হ্যান্ডেলে দেওয়া এক বার্তায় এমনটাই জানালেন তিনি।
বাপ্পা মজুমদার জানান, তিনি শনিবার ভোরে হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে সন্ধ্যায় শো রয়েছে। যেতে যেতে এই সংগীতজ্ঞ বললেন, ‘যাত্রা পথে কানে হেডফোন গুঁজে নানা ধরনের ইন্সট্রুমেন্টাল শোনা আমার একটা বাতিক! কত কত ধারণা তৈরি হয়! কত কত ধরনের সাংগীতিক ভাবনা নিয়ে সারা বিশ্ব কাজ করে যাচ্ছে অনবরত; কী অসাধারণ সব সৃষ্টি! অথচ পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে দিনে দিনে স্থূল আর অগভীর ভাবনার প্রচার-প্রসারের এক বিপুল আয়োজন দেখে খুব হতাশ লাগে; সেই সাথে এক তীব্র ভীতি কাজ করে। কী শিখছে আমাদের সন্তানেরা! প্রচারেই প্রসার (অথবা পসার) আর কুপ্রচারে দ্রুত খ্যাতি? তাই কি?’
ব্যান্ড ও একক দুই ভূমিকায় সাফল্য পাওয়া বাপ্পার মতে, ‘আমি দৃঢ়ভাবে নিজেকে একজন আধুনিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ বলে মনে করি! সেই সঙ্গে এটাও বিশ্বাস করি, দীর্ঘ চর্চায় অর্জন করা যে কোনও শিল্পকর্মের প্রতিটি আঁচড়ে যে উপলব্ধি, বিশ্বাস, আস্থা আর সর্বোপরি আত্মসম্মানের বোধ তৈরি করে, তা এসব দ্রুত পেয়ে যাওয়া সোশ্যাল মিডিয়ার স্থূল খ্যাতির চেয়ে বহু বহু বহু গুণ বেশি শক্তিশালী! আমার বক্তব্য খুবই সোজা, আমি সোশ্যাল মিডিয়ার বিরোধী নই। কিন্তু এই জাতীয় কুইক ফিক্স আর শর্টকাটের ঘোর বিরোধী! একদম বিরোধী!’
প্রসঙ্গত, বাপ্পা মজুমদার সম্প্রতি তার ব্যান্ড ‘দলছুট’ থেকে নতুন অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। যেটা ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর নামে, স্মরণে। অ্যালবামের নাম ‘সঞ্জীব’। এতে ১১টি গান রয়েছে। এগুলো এক এক করে প্রকাশ করা হচ্ছে বাপ্পার ইউটিউব চ্যানেলে।