‘ছেলেদের বলে দিও, আমি তাদের ভালোবাসি’

টনি ডিসনলন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারের ২৩ তলার একটি ফ্ল্যাটে একা একাই থাকতেন ৬৫ বছর বয়সী ব্রিটিশ টনি ডিসন। মঙ্গলবার (১৩ জুন) দিনগত রাতে ব্লকে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর বাথরুমে আটকা পড়েন তিনি।

অসহায় অবস্থায় মরিয়া হয়ে বন্ধু-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন টনি ডিসন। তিনি জানান, ফ্ল্যাটের মেঝে প্রচণ্ড গরম হয়ে থাকার কারণে তিনি সেখান থেকে সরতে পারছেন না। সর্বশেষ ভোর চারটার দিকে তাকে ফোন করেন এক বন্ধু। তাকে ডিসন বলেন, ‘আমার ছেলেদের বলে দিও, আমি তাদের ভালোবাসি।’  

এরপরই শেষ। আর কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

ডিসনের চার ছেলে এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা লন্ডনের বিভিন্ন হাসপাতালে তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বাবার খোঁজ পেতে সহায়তার আবেদন জানিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বুধবার সন্ধ্যায় ডিসনের এক সন্তান ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কেউ যদি আমার বাবা টনি ডিসনকে দেখে থাকেন তবে আমাদের জানান। গ্রেনফেল টাওয়ারের সবার জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররকে তিনি বলেন, ‘লোকজন আমার বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছে মাথায় কম্বল জড়িয়ে বের হয়ে আসতে। বাবা বলেছিলেন, তিনি বাথরুমে আছেন এবং মেঝে খুব গরম হওয়ায় বের হয়ে আসতে পারছেন না। আমি শুনেছি তিনি তা করেননি। কিন্তু আমি পুরোপুরিভাবে আশা ছেড়ে দিইনি। জরুরি সহায়তা কেন্দ্রে আমি বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। আমি বাবাকে খুঁজে যাচ্ছি।’

টনি ডিসনের সন্তান আরও বলেন, ‘আমার বাবা এখানে খুব পরিচিত ছিলেন। ফোনে আমাদের মধ্যে অনেক কথা হতো। ফ্ল্যাটে তিনি নয় বছর ধরে আছেন। তিনি একা থাকতেন এবং আনন্দে দিন কাটাতেন।’

মঙ্গলবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ১৯৭৪ সালে নির্মিত ভবনটিতে ১২০টি ফ্ল্যাট ছিল। বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ওই ভবনে ৪০০ থেকে ৬০০ মানুষের বসবাসের কথা জানিয়েছে। তবে আগুন লাগার পর ঠিক কতজন বের হতে পেরেছেন বা কতজন আটকা পড়েছেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। ভবনের ভেতরে বহু মানুষের জিম্মি হয়ে থাকার খবর জানিয়েছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

/এফইউ/