‘থেরেসা, তোমার হাতে মানুষের রক্ত’

গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় মানুষের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।  দোষীদের বিচার চেয়ে ডাকা শুক্রবারের বিক্ষোভের দিনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট পরিণত হয় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে।

বিক্ষোভে উত্তাল লন্ডন

গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনকে নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না ব্রিটিশরা। একে কতৃপক্ষের গাফিলতি হিসেবে দেখছেন তারা।  সেখানকার এক কমিউনিটি ব্লগ ওই ভবনের সম্ভাব্য আগুনের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করেছিল দেড় বছর আগে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ থাকা এক বস্তু ভবনটির সংস্কাকজে ব্যবহার করা হয়েছে। লন্ডনবাসী মনে করছে, থেরেসা সরকারের আবাসন মন্ত্রণালয় আগুনের ঝুঁকিজনিত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে ।

শুক্রবারের মিছিল থেকে বিক্ষোভকারীরা এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে সরাসরি দায়ী করেন। সমাবেশে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাত গ্রেনফেল টাওয়ারের হতাহতদের রক্তে ভিজে গেছে। ‘গ্রেনফেলের জন্য ন্যয় বিচার’ ‘থেরেসা তুমি বিদায় হও’ সহ নানা শ্লোগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আবাসের দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন বিক্ষুব্ধ মানুষেরা। এক পর্যায়ে অক্সফোর্ড সার্কাসে আয়োজিত হয় বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশ থেকে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

ঘটনাস্থলে  প্রথমবার গিয়ে দুর্গতদের সঙ্গে কথা না বলে ক্ষোভের জন্ম  দেওয়া প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়ে জনতার বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন।  তার জনপ্রিয়তায় ধস নামার খবর দিয়েছে স্বনামধন্যএক জরিপ প্রতিষ্ঠান। এই ঘটনা তার সরকার গঠন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

উল্লেখ্য, বুধবার রাতে পশ্চিম লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনের তাণ্ডবে ভবনটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পুলিশ। মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন ১৯। তবে এখনও প্রায় ৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে লন্ডন মেট্রোপলিট্রন পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে, সব মরদেহ পাওয়ার ব্যাপারে তারা নিজেরাই নিশ্চিত নন।

/বিএ/