রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকেই দায়ী করছে যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এজন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে তারা। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং বিশ্ব এই হত্যাযজ্ঞে চুপ করে বসে থাকতে পারে না।’ 

170321_-_rex_tillerson_-_0535_4e05df9c54c130fbe6673086f1309b33.nbcnews-ux-2880-1000

মার্কিন এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের ঘটনার জন্য দেশটির সামরিক নেতৃত্বকে দায়ী মনে করছি।’ 

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার পর দেশটির সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে শোনা যায় সেনাবাহিনীর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের কথা। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিসকে টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বোঝে যে মিয়ানেমারের সরকার সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটু প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে তাদের কর্তব্য সম্পর্কে আরও দায়িত্বশীল ও সাবধানী হতে হবে।’ 

যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারকে গুরুত্বপূর্ণ উত্থানশীল গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে মনে করে বলেও জানান তিনি।  তিনি বলেন, ‘এখনই তাদের আসল পরীক্ষা। এখন তাদের গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ জন আইনপ্রণেতা মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছেন।  হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সদস্যরা রেক্স টিলারসনকে এক চিঠিতে লেখেন, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এছাড়া  ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান বলে জানান টিলারসন। একইসঙ্গে তাদের প্রতিপক্ষ চীনের সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে তাদের সহযোগী মনে করে। পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করার চেষ্টা করবেন তারা।

এরপর ভারত ও চীন নিয়ে তুলনা করে তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বেশ কিছু বিষয়ে চীন আন্তর্জাতিক ধারার বাইরে কাজ করে।

চীনের বেল্ট এন্ড রোড প্রকল্প নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাই। এখানে যেন কোনোভাবেই অস্থিতিশীলতা কিংবা সহিংসতা না হয়।’

সামনের সপ্তাহেই প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়া সফরে আসবেন টিলারসন। এসময় ভারত-পাকিস্তান সফর করবেন তিনি।