১১ মাস পর ত্রাণ পেলেন বাস্তুচ্যুত ৫০ হাজার সিরীয়

সিরিয়া-জর্ডান সীমান্তে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৫০ হাজার বেসামরিকদের কাছে পৌঁছেছে জাতিসংঘের সহায়তা। অসহায় অবস্থায় ১১ মাস দিনযাপন করার পর এই সহায়তা পেলেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।  

_104160244_mediaitem104160243

প্রায় ১০ হাজার ৮০০ মাটির তৈরি বাড়ি ও তাবু রয়েছে সেখানে। সিরিয়ার সবচেয়ে করুণ আশ্রয় শিবিরের অন্যতম এটি। জাতিসংঘের মতে ক্যাম্পটিতে ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। ত্রাণ সংস্থাগুলো জানায়, কোনোরকম মেডিকেল সুবিধা ছাড়াই সেখানে সন্তান জন্মদিতে হয় নারীদের। আশ্রয় শিবিরটিতে অস্বাস্থ্য ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে শিশু মৃত্যুর অভিযোগও পাওয়া গেছে।

গত ২৭ অক্টোবর রুকবান ক্যাম্পে এই ত্রাণ পৌঁছানোর কথা ছিলো। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এই ক্যাম্পটির নিয়ন্ত্রণ আসাদ বাহিনীর কাছে। আর এর কাছেই রয়েছে মার্কিন সমর্থিত বিদ্রোহীদের ঘাঁটি। জর্ডানও এখানে ত্রাণ পৌঁছানোয় সহায়তা করেনি।

শনিবার সিরীয়-আরব রেড ক্রিসেন্ট ও জাতিসংঘের যৌথ ত্রাণবহর ক্যাম্পটিতে এসে পৌছায়। এক বিবৃতিতে সিরীয় আরব রেড ক্রিসেন্ট জানায়, ৭০-৮০টি ট্রাকে করে ১০ হাজার খাবার ও ময়দা এসেছে। ১৮ হাজার শিশুর জন্য জামা এসেছে এবং সদ্যজাতদের জন্য ১০ হাজার ৭৫টি হাইজিন কিটস ও প্লাস্টিক শিট আনা হয়েছে।

তিন থেকে চারদিনের মধ্যে এই ত্রাণ সরবরাহ করা হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়ক আলি আল জাতারি বলেন, প্রায় ১০ হাজার শিশুর জন্য আমরা জরুরি ভিত্তিতে টিকা দান কর্মসূচি পরিচালনা করছি।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ছায়াযুদ্ধে মেতে উঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন।