কারাকক্ষে সঙ্গী পাচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ?

পূর্ব লন্ডনের বেলমার্শের মতো কঠোর নিরাপত্তায় ঘেরা কারাগারে বন্দিদের কারাকক্ষে সঙ্গী রাখা নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখে ব্রিটিশ বিচার মন্ত্রণালয়। তবে সেখানকার নতুন বন্দি জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ সম্ভবত কারাকক্ষে সঙ্গী পেতে পারেন বলে এক অনুসন্ধানে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভাইস নিউজ।noname

সুইডেনে দুই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের আদালত থেকে কয়েক দফা জামিন নেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। পরে তাকে সুইডেনে ফেরত পাঠানো হলে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কায় লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে নেন তিনি। গত ১১ এপ্রিল তার রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিলের পর তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। ওই দিনই তাকে ব্রিটিশ আদালতে তোলা হলে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সম্প্রতি তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ব্রিটিশ আদালত। গ্রেফতারের পর থেকে ‘যুক্তরাজ্যের গুয়ান্তানামো বে’ খ্যাত কুখ্যাত কারাগারে ঠাঁই হয়েছে অ্যাসাঞ্জের।





রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিলের ক্ষেত্রে অ্যাসাঞ্জকে বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট অতিথি হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চালায় ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষ। তবে লন্ডন দূতাবাসের একটি ছোট কক্ষে নিজের বিড়ালের সাথে সাতটি বছর কাটিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। কেবল মাঝে মাঝে কিছু দর্শণার্থী সাক্ষাৎ করতে পারতো তার সাথে।

ভাইস নিউজের অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসের ৩৩০ বর্গমিটারের কক্ষের চেয়ে বেলমার্শ কারাগারে আরও একটু বড় পরিসরে থাকার সুযোগ পাবেন অ্যাসাঞ্জ। ভাইস নিউজের তথ্য অনুযায়ী, বেলমার্শ কারাগারের প্রায় ৬০ শতাংশ কক্ষে একাধিক বন্দি থাকে। এর ফলে ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ডের সময়কালে অন্য বন্দিদের সাথে থাকার সুযোগ পেতে পারেন অ্যাসাঞ্জ। এছাড়াও কারাগারটিতে রয়েছে আলাদা কঠোর নিরাপত্তা ইউনিট। এই ইউনিটে আনুষ্ঠানিক অভিযুক্ত না হওয়া সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের বন্দি রাখে যুক্তরাজ্য। সংঘবদ্ধ সহিংসতার পর গত বছর কারাগারটির একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক বোর্ডের তদন্তে দেখা যায়, সেখানকার বন্দিদের কাছে মাদক আর মোবাইল ফোন রাখার নজির রয়েছে।
‘যুক্তরাজ্যের গুয়ানতানামো বে’ নামে খ্যাত বেলমার্শ কারাগারে অতিরিক্ত বন্দি সংখ্যাও একটা সমস্যা বলে মত দিয়েছে যুক্তরাজ্যের কারা পরিদর্শকের প্রতিবেদন। ৯০০ বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও গত বছর দুই বন্দি থাকার মতো ১২৫টি কক্ষে তিনজন করে বন্দি রাখা হয়েছিল। কারা পরিদর্শকের কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়া ছয় বন্দির মধ্যে মাত্র একজনই প্রতিদিন গোছলের সুযোগ পাওয়ার কথা বলেছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কাপড় কাচার সুবিধা সেখানে অপ্রতুল। কারাবন্দিদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীরও অভাব রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, নতুন বন্দিরা প্রথম রাতে একটি কক্ষে থাকে। পরদিন আনুষঙ্গিক তথ্য বিবেচনায় নিয়ে অন্য বন্দিদের সাথে রাখার ঝুঁকি পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কারাগারে অ্যাসাঞ্জের বসবাস নিয়ে তথ্য জানতে চেয়েও ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বা অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ও উইকিলিকসের সাড়া পায়নি ভাইস নিউজ। ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জকে ধরিয়ে দেওয়া হলেও তার বিড়াল কোথায় আছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।