জি সেভেন সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী!

ফ্রান্সের বিয়ারিতজ শহরে রবিবার জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে হাজির হয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ। ইরান শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি সেভেন-এর সদস্য না হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবাক করে দিয়ে এতে অংশ নেন তিনি। শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে পরমাণু সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে মিলিত হন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ-র সঙ্গে।noname
ফরাসি প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে নির্ধারিত সফর স্থগিত রেখে ইরানের সরকারি বিশেষ বিমানে বিয়ারিতজে পৌঁছান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা জানানো হয়। শিল্পোন্নত সাত জাতিগোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলনে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কয়েক ঘণ্টার উপস্থিতিকে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

টুইটারে দেওয়া পোস্টে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের ছবি প্রকাশ করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিয়ারিতজে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভস লা দ্রিয়াঁ-ও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আধা ঘণ্টার এ বৈঠকের আগে জ্যঁ-ইভস লা দ্রিয়াঁ-র সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিয়ারিতজে যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। টুইটারে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, সামনে বন্ধুর পথ হলেও চেষ্টা চালাতে দোষের কিছু নেই।

শনিবার জি সেভেন-এর তিন দিনব্যাপী বৈঠক শুরুর আগের দিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যারিস সফর করে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতের বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি নিয়ে জি সেভেন সম্মেলনে আলোচনার কথা জানান ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পরে সম্মেলন শুরু হওয়ার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফের জরুরিভিত্তিতে বিয়ারিতজ সফরের আমন্ত্রণ জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনের আলোচনায় ইরান ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পায় বলে জানিয়েছেন পশ্চিমা কূটনীতিকরা।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাড়ে তিন ঘণ্টা সফরে ঠিক কী কী আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে পাশ্চাত্যের সঙ্গে তেহরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের উপায় নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ইতোপূর্বে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। শুক্রবার প্যারিস সফরে ইউরোপকে পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের তাগিদ দেন জারিফ। কথা বলেন এই সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও।

২০১৮ সালে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় দেশগুলো এ সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগী হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ সমঝোতাকে কেন্দ্র করে তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছেন। সূত্র: পার্স টুডে, আল জাজিরা।