বাহামা বিধ্বস্ত করে যুক্তরাষ্ট্র উপকূলের দিকে এগুচ্ছে ডোরিয়ান

হারিকেন ডোরিয়ানের আঘাতে বিধ্বস্ত বাহামার প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা শুরু করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। আকাশ থেকে তোলা ছবিতে হারিকেনের তীব্রতাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী হার্বাট মিননিস জানিয়েছেন, কিছু এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের বর্তমান সংখ্যা সাতজন থেকে আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাতের সঙ্গে আবাকো দ্বীপপুঞ্জে আছড়ে পড়া এই হারিকেনের কারণে বাহামাতেও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ও বন্যা হয়েছে। ডোরিয়ান খানিক উত্তরে সরে গেলেও এখনও যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ব উপকূলের জন্য হুমকি হয়ে আছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।noname

স্থানীয় সময় রবিবার দুপুরে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে বাহামার অ্যাবাকো দ্বীপের এলবো কে অঞ্চলে পাঁচ মাত্রার হারিকেন হিসেবে আঘাত হানে  ঘূর্ণিঝড়টি। সেখানে আঘাত হেনে এটি ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বাতাসের তীব্রতা ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটারে নেমে এসে ইতোমধ্যে দুই মাত্রার হারিকেনে পরিণত হয়েছে এটি।

মঙ্গলবার বাহামার প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন মৃতের সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত জনে দাঁড়িয়েছে। তবে তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা করছি আরও মৃতের ঘটনা জানা যাবে। এটা কেবল প্রাথমিক তথ্য’। বাহামার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় জাতীয় সংকট এটা’।

একটা ত্রাণ গ্রুপ পরিচালনা করেন লিয়া হেড বিজবি। আবাকো অঞ্চল সফরে গিয়েছেন তিনি। এই ত্রাণকর্মী বলেন তার প্রতিনিধিরা তাকে জানিয়েছেন আরও বহু মানুষ মারা গেছেন।

আকাশ থেকে তোলা ছবিতে আবাকোর মাইলের পর মাইল জুড়ে উড়ে যাওয়া ছাদ, উল্টে যাওয়া গাড়ি, কন্টেইনার, নৌকাসহ ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসস্তুপের ছবি দেখা গেছে। তবে গ্রান্ড বাহামার পরিস্থিতি এখনও পরিষ্কার নয়। বিরোধী দলীয় নেতা ফিলিপ ব্রেভ পরিস্থিতিতে ভয়ঙ্কর বলে অভিহিত করেছেন।

বেশিরভাগ এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে না পারায় স্থানীয়রা নৌকা ব্যবহার করে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তবে বন্যায় রাস্তাঘাট ডুবে, গাছ ভেঙে পড়ায় এবং ধ্বংসস্তুপ ভাসতে থাকায় সেই তৎপরতাও ব্যাহত হচ্ছে।

ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস জানিয়েছে, গ্রান্ড বাহামার ৪৫ শতাংশ বাড়ি ও আবাকোর প্রায় ১৩ হাজার ঘরবাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে নয়তো ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সহায়তার দরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে ডোরিয়ান এখন উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগুচ্ছে। আগামী দুই দিনে খানিক দুর্বল হলেও তা শক্তিশালী হারিকেনই থাকবে। বুধবার রাতে এই ঘূর্ণিঝড়টি ফ্লোরিডা ও জর্জিয়া উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে আর শুক্রবার সকালে ক্যারোলিনায় আঘাত হানতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ডোরিয়ানের তাণ্ডবের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভাগ্য খানিকটা ভালো হলেও সতর্কতা সরিয়ে নেওয়া যাবে না।