যুক্তরাজ্যে পোশাক রফতানিতে সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

পূর্বনির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর তথা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করবে যুক্তরাজ্য। ইতোমধ্যেই সম্প্রতি শুরু হওয়া ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দ্বিতীয় অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে এ নিয়ে কথা বলেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তিনি বলেছেন, ৩১ অক্টোবর ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের নিরাপদ প্রস্থানই হবে যুক্তরাজ্যের অগ্রাধিকার। তবে শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ সরকার ইইউ-এর সঙ্গে কোনও চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট-ই কার্যকর হবে। তবে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে অস্থায়ীভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানিতে শাস্তিমূলক উচ্চ শুল্ক না বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এরমধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পোশাকও রয়েছে। অর্থাৎ, যুক্তরাজ্যে পোশাক রফতানিতে শুল্ক সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।noname
ব্রেক্সিট কার্যকরের পর যুক্তরাজ্যের বাজারে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কিছু পোশাকের ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা রয়েছে। তবে বাংলাদেশসহ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের পণ্যের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না।

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য নীতি বিষয়ক মন্ত্রী কনর বার্নস বলেন, যুক্তরাজ্য ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের প্রথম দিন থেকেই আমরা বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রস্তুত; তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের অস্থায়ী শুল্ক ব্যবস্থা পুরো ব্রিটেনের অর্থনীতিকে সাহায্য করবে। এটি ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে সহায়তা করবে। ব্রিটিশ গ্রাহকদের জন্য পুরো দুনিয়া থেকে সর্বোত্তম মূল্যে সেরা পণ্য আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করবে। অস্থায়ী শুল্ক ব্যবস্থা ১২ মাস পর্যন্ত প্রয়োগ করা হবে। স্থায়ী পদ্ধতির বিষয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি নাগাদ আলাপ-আলোচনা শুরু হবে।

ব্রিটিশ সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড জানিয়েছে, ব্রেক্সিটের পর অস্থায়ী শুল্কের সময়সীমা সংশোধন করে ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর ফলে উপকৃত হওয়া দেশের তালিকায় বাংলাদেশরও নাম রয়েছে।

সরকারি হিসাবে, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য। ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে মোট তিন হাজার ৯৮৯ দশমিক ১২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়েছিল। এর একটা বড় অংশজুড়েই ছিল তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার সামগ্রী।

উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে হাঁটারও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন তিনি।