এই রায়ে ভারতের সামাজিক বন্ধন জোরালো হবে: বিজেপি

ভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। এ নিয়ে রাজনৈতিক নেতা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সকলেই একই সুরে কথা বলেছেন।  তারা বলেছেন, এ রায়ের ফলে ভারতের ঐক্য আরও সুসংহত হবে। সবাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।   

Supreme-Court-of-India

শনিবার বাবরি মসজিদ মামলার চূড়ান্ত রায়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত অযোধ্যার বিতর্কিত ওই ভূমিতে একটি মন্দির নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী, বিতর্কিত স্থানটি সরকারি ট্রাস্টকে দেওয়া হবে। বাবরি মসজিদের ওই ২ দশমিক ৭৭ একর জমি পাবে হিন্দুরা। আগামী তিন মাসের মধ্যে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করবে সরকার। পরে সেখানে মন্দির প্রাঙ্গণ নির্মাণ করবে তারা। পরিবর্তে অযোধ্যার অন্য স্থান থেকে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর জমি পাবে মুসলিমরা।

আদালতের রায়ের পর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বাবরি মসজিদ মামলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে সবাইকে শান্তি বজায় রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অযোধ্যা সংক্রান্ত রায় ঐতিহাসিক। এই রায় ভারতের সামাজিক বন্ধনকে আরও জোরালো করবে। সবাইকে ন্যায়সম্মত পথে ও উদারতার সঙ্গে রায়টি গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। আমি এই যুগান্তকারী রায়ের পরে জনগণকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করছি।’

ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘আমি শ্রী রামের জন্মভূমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এই সিদ্ধান্তটি স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে গ্রহণ করার এবং শান্তি-সম্প্রীতিতে পরিপূর্ণ ‘এক ভারত-শ্রেষ্ট ভারত’ বিষয়ে আমাদের সংকল্পে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার জন্য আবেদন করছি।’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘প্রত্যেকের এই রায় মেনে নেওয়া উচিত এবং শান্তি বজায় রাখা উচিত।’ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়কে প্রত্যেকের স্বাগত জানানো উচিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই রায় গুরুত্বপূর্ণ। এর পরে এই ইস্যুতে আর বিতর্ক থাকা উচিত নয়। এটাই আমি প্রত্যেকের কাছে আবেদন করতে চাই।’

স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় মামলার রায় ঘোষণা শুরু করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। সকাল ১১ টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১ টা) রায় ঘোষণা শেষ হয়।

রায় ঘোষণার এক পর্যায়ে বলেছেন, হিন্দুরা বিশ্বাস করেন এখানেই রামের জন্মভূমি ছিল। তবে কারও বিশ্বাস যেন অন্যের অধিকার না হরণ করে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) খননের ফলে যে সব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে, তাতে স্পষ্ট যে সেগুলো অনৈসলামিক। তবে এএসআই এ কথা বলেনি, যে তার নীচে মন্দিরই ছিল। রায়ে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, বাবরের সহযোগী মির বাকি মসজিদ তৈরি করেছিলেন, তবে কবে মসজিদ তৈরি হয়েছিল, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।