কোয়ারেন্টিনে থাকা তাবলিগ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেন যোগী আদিত্যনাথ

দিল্লির নিজামুদ্দিনের জনসমাগমে অংশ নেওয়া তাবলিগ জামাতের বেশ কয়েক জন সদস্যকে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ওই সদস্যরা করোনা সতর্কতা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। তাবলিগ সদস্যদের এসব আচরণকে ঘৃণ্য অপরাধ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ) মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এই আইনে অভিযুক্ত হলে বিনা বিচারে এক বছর পর্যন্ত আটক রাখা যাবে তাদের।noname

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তাবলিগ জামাতের একটি আয়োজন গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে শুরু হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও কিরগিজস্তানের প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই আয়োজনে অংশ নেয়। ১৫ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলে। অনুষ্ঠান শেষেও অনেকে সেখানে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকে। ২৪ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরুর সময়েও সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিল। এখন পর্যন্ত ওই আয়োজনে অংশ নেওয়া ৩৮৭ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ওই আয়োজনে অংশ নেওয়া ও তাদের সংস্পর্শে আসা অনেককে।

উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের এমএমজি হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে দিল্লির আয়োজনে অংশ নেওয়া ১৩৬ জন তাবলিগ সদস্যকে। হাসপাতালটির চিফ মেডিক্যাল অফিসার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিরা করোনা সতর্কতা উপেক্ষা করে কর্মীদের ঝুঁকিতে ফেলছেন। তারা আইসোলেশনে না থেকে ওয়ার্ডের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর কর্মীদের বিড়ি-সিগারেট এনে দিতে বলছেন।

কোয়ারেন্টিনে থাকা এসব ব্যক্তিদের সম্পর্কে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘তারা আইনও মানবে না আবার নির্দেশও অনুসরণ করবে না। তারা মানবতার শত্রু, নারী স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে তারা যা করেছে তা ঘৃণ্য অপরাধ। তাদের বিরুদ্ধে আমরা এনএসএ ব্যবহার করবো, তাদের ছাড়া হবে না’।

গাজিয়াবাদের এমএমজি হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল অফিসার রবিন্দ্র সিং এনডিটিভিকে বলেছেন, এসব রোগীদের অভব্য আচরণ নিয়ে আমাদের নার্স এবং প্যারামেডিক কর্মীরা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কর্মীরা বহুবার অভিযোগ করেছেন, আমি রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি কিন্তু তারা শুনতে চায় না। শেষ পর্যন্ত আমাদের কর্মীরা বলেছে এই অবস্থায় তারা কাজ করবে না, সেকারণে আমরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেই’।

কোয়ারেন্টিনে থাকা এসব তাবলিগ সদস্যদের বিরুদ্ধে নারীদের ওপর আঘাত, অভব্য আচরণ ও সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশের কাছে মামলা দায়ের হয়েছে।