রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে থাইল্যান্ডের রাজার জার্মান প্রাসাদের বাইরে বিক্ষোভ

রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে থাইল্যান্ডের রাজার জার্মান প্রাসাদের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে একদল থাই অ্যাক্টিভিস্ট। শুক্রবারের ওই বিক্ষোভ থেকে রাজা মহাভিজিরালোংকর্নের প্রাসাদের বাইরে একটি প্রতীকী ফলক লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে লেখা ছিল থাইল্যান্ড তার জনগণের। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।12

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বিক্ষোভে অংশ নেয় অ্যাক্টিভিস্টরা। আয়োজক সংগঠন অ্যাকশন ফর পিপলস ডেমোক্র্যাসি-র জুনিয়া লিমপ্রাসার্ট বিক্ষোভকারীদের সামনে রাজার উদ্দেশে লেখা একটি লিখিত চিঠি পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, থাই জনগণ এমন কাউকে রাজা হিসেবে চায় না; যিনি বছরের অধিকাংশ সময় জার্মানিতে পড়ে থাকবেন।

চিঠিতে থাইল্যান্ডে আরও অধিক গণতন্ত্রেরও দাবি জানানো হয়।

জুনিয়া লিমপ্রাসার্ট বলেন, ‘আমরা চাই রাজা সিংহাসন ছেড়ে দেবেন এবং জনগণকে হয়রানি করা বন্ধ করবেন।’

এ বিক্ষোভের বিষয়ে জার্মানিতে নিযুক্ত থাই দূতাবাসের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাজপ্রাসাদের পক্ষ থেকেও কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

থাইল্যান্ডের রাজার প্রতি দেশটির জনগণের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। রাজতন্ত্র বিলোপ বা সংস্কারের দাবিও অনেক পুরনো। গত জুলাইয়ে যখন রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজা মহাভিজিরালোংকর্নের ৬৮তম জন্মদিন উদযাপন করা হচ্ছিল তখনও দেশটিতে রাজতন্ত্র অবসানের জোরালো দাবি উঠে।

রাজা মহাভাজিরালোংকর্ন করোনা-সংকট ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই অবকাশ যাপনের জন্য জার্মানিতে পাড়ি দেন। ফলে গত জুলাইয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে নিজের জন্মদিনের রাষ্ট্রীয় আয়োজনেও তিনি থাকতে পারেননি। এদিন রাজধানী ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ রাজার প্রতি অনুগত থেকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। প্রথা অনুযায়ী ৬৯ জন বৌদ্ধ ভিক্ষুর উপস্থিতিতে এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। তবে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার বাইরে এদিন রাজপথে জড়ো হয়ে রাজার বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে রাজতন্ত্র বিরোধীরা। অনেকের হাতে ছিল রাজতন্ত্র অবসানের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড।

রাজার সমালোচনা দণ্ডনীয় অপরাধ

জার্মানিতে রাজা মহাভিজিরালোংকর্নের দিন কেমন কাটছে মাঝেমধ্যেই তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। তবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে সেসব খবর থাইল্যান্ডে প্রকাশ করা হয় না। দেশটিতে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের তৎপরতা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাজতন্ত্রের বা রাজার বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিন থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

রাজতন্ত্র-বিরোধিতার কারণে মানসিক হাসপাতালে

অ্যাক্টিভিস্ট টিয়াগন উইদিটন নানা বিষয়ে সরকারের সমালোচনার এক পর্যায়ে ‘আমি রাজতন্ত্রের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছি’ লেখা টি-শার্ট পরে ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার পর তাকে মানসিক চিকিৎসার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। অবশ্য প্রতিবাদের মুখে দুই সপ্তাহ পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।