আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘাত চলছেই, যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ

আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘাত নিরসনের সব প্রচেষ্টাই যেন ব্যর্থ; দ্বিতীয়বারও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা গেল না নাগরনো-কারাবাখে। দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সেনারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং ক্রমশ সেই সংঘাত জোরালো হয়। গোলাবর্ষণে ক্ষতি হয়েছে একের পর এক শহরের। এ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কয়েকশ’ মানুষের।

noname

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ।

সপ্তাহ দুয়েক আগে মস্কোর মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির চুক্তি করেছিল আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। বরং যুদ্ধের ভয়াবহতা বেড়েছিল। গত রবিবার আবারও দুই দেশকে নিয়ে শান্তি আলোচনায় বসেছিল রাশিয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যস্থতায় নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় দুই দেশ। ঠিক হয়, আগামী তিন সপ্তাহ একে অপরকে আক্রমণ করবে না তারা।

তবে, সেই চুক্তির কয়েক মিনিটের মধ্যেই নতুন করে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ে দুটি দেশ। সোমবার আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে সংঘাতে তাদের ৭২৯ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আজারবাইজান তাদের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেয়নি। তবে তাদের দাবি অনুযায়ী ৬১ বেসামরিক আজারি নিহত ও ২৮২ জন আহত হয়েছে।

আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় লিখিত বিবৃতিতে দাবি করেছে, চুক্তির কয়েক মিনিটের মধ্যেই আর্মেনিয়া আজারবাইজানের বেশ কয়েকটি শহরে গোলাবর্ষণ শুরু করে। রবিবার সারা রাত ধরেই গোলাবর্ষণ করে ধ্বংস করা হয় শহরগুলো। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলো টারটার, আঘজাবেদি, আঘদাম।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ দাবি করেছেন, অন্যায়ভাবে আর্মেনিয়া যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। একের পর এক শহরে গোলাবর্ষণের পরে আজারবাইজানও তার উত্তর দিতে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে আর্মেনিয়ার অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে আজারবাইজান। নাগরনো -কারাবাখের যোদ্ধাদের দাবি, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কারাবাখের মারতুনি এবং আরও চারটি গ্রামে গোলাবর্ষণ শুরু করে আজেরি সেনারা।

যোদ্ধাদের সমর্থন করে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আজেরি বাহিনী হামলা চালানোর পর 'সমান' জবাব দেওয়া হয়েছে আজারবাইজানকে।

আজারবাইজান বলছে, এখন পর্যন্ত নাগরনো-কারাবাখের ১৬টি এলাকা তাদের সেনারা দখল করতে পেরেছে। আর্মেনিয়া অবশ্য আজেরি সেনার এই দাবি মানতে রাজি হয়নি।

বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই যুদ্ধ কি আরও ব্যাপক আকার নিতে পারে? এখন পর্যন্ত আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকলেও তুরস্ক আজারবাইজানকে সম্পূর্ণ সাহায্য দিচ্ছে।

অন্যদিকে আর্মেনিয়াকে সাহায্য করার চুক্তিতে আবদ্ধ রাশিয়া। রাশিয়া বহু দিন ধরেই শান্তির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া, ফ্রান্স ও আমেরিকা যৌথভাবে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। তবে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।