পারমাণবিক বিপর্যয়ে বেঁচে থাকা এবং ভেঙে পড়া মানবসভ্যতাকে পুনর্গঠন করার জন্য সেরা স্থান হতে পারে অস্ট্রেলিয়া ও দেশটির প্রতিবেশী নিউ জিল্যান্ড। রিস্ক অ্যানালাইসিস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটিই দাবি করেছেন গবেষকরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।
প্রতিবেদনটিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, আইসল্যান্ড, সলোমন আইল্যান্ডস ও ভানাউতুকে পারমাণবিক যুদ্ধ, বড় আগ্নেয়গিরি বা উল্কাপিণ্ডের আঘাতে সৃষ্ট সূর্যে আলো হ্রাস করে দেওয়ার মতো বিপর্যয়ে নিজেদের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত খাবার উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও পৃথিবীজুড়ে জীবিতদের অসংখ্য স্থান বা পকেট থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষকরা ১৩টি বিষয়ের ভিত্তিতে ৩৮টি দ্বীপ দেশের তুলনা করেছেন। যাতে করে বিপর্যয়ের পর টিকে থাকা দেশগুলোর সফলতা সম্পর্কে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। যেসব বিষয় তারা বিবেচনায় নিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য উৎপাদন, জ্বালানিতে আত্মনির্ভরতা, জলবায়ুতে উৎপাদন ও দুর্যোগের প্রভাব। এই তালিকায় পারমাণবিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার সেরা স্থান হিসেবে রয়েছে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার খাদ্য সরবরাহের সুরক্ষা বিশাল যা দিয়ে অতিরিক্ত কয়েক কোটি মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার তূলনামূলক ভালো অবকাঠামো, বিপুল পরিমাণ জ্বালানি উদ্ধৃতি, উচ্চতর স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বাজেটের কারণে তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে দেশটি। তবে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্কের কারণে পারমাণবিক যুদ্ধের একটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে দেশটির।
এই ক্ষেত্রে নিউ জিল্যান্ড কিছুটা এগিয়ে রয়েছে বলে গবেষকরা মনে করেন।
গবেষক উইলসন ও সহ-গবেষক ড. ম্যাট বয়েড লিখেছেন, তালিকার অপর দ্বীপ দেশগুলো এমন সংকটের সময় পর্যাপ্ত খাবার উৎপাদনে সক্ষম হবে। কিন্তু শিল্প ও সামাজিক সংহতি ধ্বংসের ফলে তাদের টিকে থাকার সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য উৎপাদন ৯৭ শতাংশ কমে যেতে পারে। তাদেরকে তখন খাদ্য উৎপাদনের নতুন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হবে।