সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি

সিরিয়ায় বিমান হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ইসরায়েল। দামেস্কের নতুন ইসলামিক শাসকগোষ্ঠীকে সতর্ক করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে তেল আবিব। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) প্রকাশিত ওই একই বিবৃতিতে তারা অভিযোগ করেছে, সিরিয়াকে আশ্রিত রাজ্যে পরিণত করার চেষ্টা করছে তুরস্ক। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক অভিযান পরিচালনার সময় একাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এসময় তাদের পালটা হামলায় একাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সানা বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় ওই এলাকায় নয় জন নিহত হয়েছেন।

সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি হামলাকে ‘অযৌক্তিক উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রয়াস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আগ্রাসন বন্ধের জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

এদিকে, সিরিয়া, লেবানন ও নিকটবর্তী অঞ্চলে নেতিবাচক ভূমিকা রাখার জন্য তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। প্যারিসে আয়োজিত এক সংবাদসম্মেলনে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার বলেছেন, সিরিয়াকে নিজেদের অধীনস্থ অঞ্চল বানাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে তুরস্ক। তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই।

ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকেই সিরিয়ায় ইসলামপন্থি গোষ্ঠীর উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ইসরায়েল। সে আশঙ্কার বহিঃপ্রকাশ থেকেই বিগত কয়েকমাসের ধারাবাহিকতায় দামেস্ক ও নিকটবর্তী বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তেল আবিব।

আসাদ সরকার পতনের পর থেকেই সিরিয়ার নিজেদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। সে উদ্দেশ্যেই সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে ভূমি দখল, সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদান, সিরীয় সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্রশত্র ধ্বংস করা এবং দেশটিকে দুর্বল রাখতে হোয়াইট হাউজকে প্ররোচিত করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।

ইসরায়েলি হামলার পর বৃহস্পতিবার তাদের নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে আঙ্কারা। তাদের অভিযোগ, সিরিয়ার স্থিতিশীলতা প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত করছে ইসরায়েল এবং তাদের উচিত অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করা।

আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ইসরায়েলকে বৃহত্তম হুমকি অভিহিত করে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েল এক কৌশলগত অস্থিতিশীল শক্তিতে পরিণত হয়েছে যারা কেবল বিশৃঙ্খলা তৈরি করে এবং সন্ত্রাসবাদকে উসকে দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের উচিত তাদের সম্প্রসারণবাদী নীতি পরিত্যাগ করা উচিত। একইসঙ্গে, সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় হস্তক্ষেপ না করে অধিকৃত এলাকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।