সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র দমনে আমেরিকা মহাদেশের রাষ্ট্র হাইতিকে আর অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ অবস্থায় প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে নিরাপত্তা সহায়তা চেয়েছেন হাইতির মন্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) আমেরিকা মহাদেশের রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটসের (ওএএস) এক বৈঠকে এই আহ্বান করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রশাসনের ক্যারিবীয়ান অ্যাফেয়ার্সের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি বারবারা ফেইনস্টেইন। তিনি বলেন, হাইতির জনগণের প্রাপ্য নিরাপত্তা ও উন্নতির জন্য আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে এই কাজের আর্থিক বোঝা আমরা আর বইতে পারব না।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে হাইতির জন্য প্রতিশ্রুত কিছু অর্থ সহায়তা বন্ধ করেছে এবং জাতিসংঘ-সমর্থিত মিশনের জন্য পূর্বে ঘোষিত কিছু অর্থ বরাদ্দ স্থগিত রেখেছে।
সাপ্তাহিক এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, হাইতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওএএসের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেমন তারা একটি যৌথ বাহিনী গঠন করতে পারে।
জাতিসংঘের দাবি, সশস্ত্র অপরাধীরা হাইতির রাজধানী অনেকটাই করায়ত্ত করে ফেলেছে। অপরাধীদের কারণে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। আর তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপের নেপথ্যে রয়েছে কালোবাজার থেকে সংগ্রহ করা অস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সীমান্তবর্তী ডোমিনিকান রিপাবলিক হয়ে দেশটিতে প্রবেশ করে।
হাইতির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-মিশেল মোইস দাবি করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে অস্ত্র ও মাদক পাচার। ডোমিনিকান সীমান্ত এবং সমুদ্রপথ হয়ে কলম্বিয়ার কোকেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সংঘবদ্ধ অপরাধীরা।
কিছু দেশ হাইতির নিরাপত্তা সহায়তার জন্য সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও, বাস্তবে খুব কম সেনা মোতায়েন হয়েছে। কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি বাহিনী এখনও পর্যাপ্ত সহায়তা পাচ্ছে না এবং রাজধানী ও অন্যান্য এলাকায় অপরাধীদের অগ্রগতি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবেশীদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে হাইতির কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটিতে মাত্র ১২ হাজার পুলিশ এবং এক হাজার সেনা সদস্য রয়েছেন। প্রায় এক কোটি ২০ লাখ হাইতিবাসীকে সশস্ত্র অপরাধীদের থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই সংখ্যা নেহায়েত অপ্রতুল।