মতবিরোধ সত্ত্বেও পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে আরেক দফা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন এবং ইরানি কর্মকর্তারা। ওমানের মধ্যস্থতাকারীদের উপস্থিতিতে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কূটনীতিবিদ স্টিভ উইটকফের এই বৈঠক শুক্রবার (২৩ মে) আয়োজিত হবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
আলোচনার ফল নিয়ে দুপক্ষই যথেষ্ট উন্মুখ হয়ে রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাচ্ছেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সক্ষমতার পথ রুদ্ধ করতে। আর তেহরানের এখন প্রাথমিক উদ্দেশ্য, নিষেধাজ্ঞার বোঝা নামিয়ে অর্থনীতিকে কিছুটা গতিশীল করা।
তবে সমস্যা হয়েছে দুপাশের পাল্টাপাল্টি শর্ত নিয়ে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মঙ্গলবার বলেছেন, ওয়াশিংটনের চাওয়া তেহরানের যেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে তাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে হোয়াইট হাউজের আপত্তি নেই। অবশ্য এমন কোনও সমঝোতায় পৌঁছানো সহজ হবে না বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এদিকে, ওয়াশিংটনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের দাবিকে বাড়াবাড়ি ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। তিনি সতর্ক করেছেন যে, মার্কিন শর্ত অনুযায়ী অগ্রসর হলে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
আলোচনার অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো, তেহরান তার উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠাতে রাজি নয় এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে চায় না।
তেহরান বলেছে, এক শর্তে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কিছু সীমা মেনে চলতে তারা রাজি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের এই নিশ্চয়তা লাগবে যে, ভবিষ্যৎ পারমাণবিক চুক্তি থেকে হুট করে তারা সরে যাবে না।
ট্রাম্প তার আগের মেয়াদে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে ওয়াশিংটন বেরিয়ে যাওয়ার জবাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বৃদ্ধি করেছিল তেহরান।
এবার ক্ষমতায় আসার পর ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ নীতি গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, ইরানকে বাগে আনার কেবল দুটো পন্থা রয়েছে- হয় তাদের সামরিক শক্তিতে বশ করতে হবে অথবা নিষেধাজ্ঞার ভারে জর্জরিত করে নত রাখতে হবে।