গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবের নিশ্চয়তা চায় হামাস

মার্কিন সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিশ্চয়তা চায় হামাস। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ওই ব্যক্তি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করলে গাজায় হানাহানির অবসান হবে- এই নিশ্চয়তা চাইছে হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, চুক্তির বিস্তারিত নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।

শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সবার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তাদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এবারের প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালায় হামাস। ওইদিন অন্তত ১২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয় বলে দাবি করে আসছে নেতানিয়াহু সরকার। এই হামলার জবাবে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের কথিত ১২ দিনের সংঘাতের অবসান ঘটানোর ধারাবাহিকতা গাজায় ধরে রাখতে আগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন। তবে গতকালও গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা কমার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যায়নি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বয়ান অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গতকাল অন্তত ৫৯ জন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, গাজায় হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রাথমিক শর্তে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। এই সাময়িক বিরতির সময় যুদ্ধ পুরোপুরি অবসান নিশ্চিতে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট পক্ষরা।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের প্রস্তুতি তাদের দিকে প্রায় চূড়ান্ত। একাধিক সূত্র বলছে, শুক্রবারের মধ্যে হামাস ইতিবাচক সাড়া দিলে ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেবেন।

পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক কর্মকর্তা বলেছেন, ১০ জন জিম্মি এবং ১৮ জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিষয়টি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত আছে। হামাসের হাতে এখনও অর্ধশত জিম্মি আছে বলে জানা গেছে, যার মধ্যে জনা বিশেক জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েল।

ওই ব্যক্তির বরাতে জানা যায়, প্রস্তাবে আরও রয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলে তাৎক্ষণিকভাবে গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারও শুরু করা হবে। স্থায়ী যুদ্ধাবসানের বিষয়েও এই সময়ের মধ্যে আলোচনা শুরুর পরিকল্পনা রাখা হয়েছে প্রস্তাবে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও হামাসের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে গেছে। হামাসের পুরো নির্মূল এবং তাদের অস্ত্রত্যাগ নিশ্চিত না হলে যুদ্ধ থামাতে চায় না ইসরায়েল। আর ইসরায়েলি সেনা গাজা থেকে পুরো প্রত্যাহার ছাড়া আলোচনা হবে না বলে গোঁ ধরে আছে হামাস।