বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার ডাকাতি

আরসিবিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ফিলিপাইন!

ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নেস্তর এস্পেনিলাবাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার সঙ্গে ফিলিপাইনের কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই বিষয়ে মে মাসের প্রথমদিকেই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। তেমন ঘটলে, ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে, যে ব্যাংকের একাউন্ট ব্যবহার করে ওই সাইবার ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জাপানে আরও ভূমিকম্পের আশঙ্কা, ঘরহারা আড়াই লাখ মানুষ
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাকড করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ চুরি করে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) জুপিটার শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। এ ঘটনায় ব্যাংকের সিইও লরেঞ্জ তান জুপিটার শাখার ব্যবস্থাপক সান্তোস দিগুইতোকে দায়ী করে আসছেন শুরু থেকেই। তবে দিগুইতো বলেছেন, আর্থ কেলেঙ্কারির হোতারা তাকে দাবার ঘুঁটি বানিয়েছে। সিনেট তদন্ত দলের কাছে দিগুইতো অভিযোগ করেছেন, ব্যাংকের সিইও সবই জানতেন। তাই দিগুইতোর অভিযোগ সত্য হলে মে মাসে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে আরসিবিসির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭২
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নেস্তর এস্পেনিলা বলেছেন, ‘যদি এখানে বড় মাপের কোনও অনিয়ম হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যাংকের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাদের জরিমানা করা হতে পারে, অথবা নির্ধারিত ব্যবসা কমিয়ে আনতে বা বন্ধ করে দিতে বলা হতে পারে। পরিচালনা পরিষদ থেকে শুরু করে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন।’ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসন্ধানের পর তা পাঠানো হবে ফিলিপাইনের অর্থপাচার নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যান্টি –মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের কাছে। তবে ওই তদন্তের কতটুকু জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে, তা নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আরসিবিসি প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো তান

নেস্তর এস্পেনিলা বলেন, ‘জনগণ ওই অর্থচুরির ঘটনায় অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন, যা বড় রকমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।’ দেশটির ব্যাংক শিল্প স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থ ব্যবস্থাকে এমন অনাকর্ষণীয় করে তুলবে হবে, যেন তাতে অবৈধ অর্থ না আসতে পারে।’

আরও পড়ুন: অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আড়াই লাখ জাপানি, উদ্ধার তৎপরতা চলছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া ওই ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের পর সেখান থেকে ওই অর্থ মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ফিলরেম থেকে পেসোতে (ফিলিপাইনের মুদ্রা) রূপান্তরের পর ক্যাসিনোতে পাঠানো হয়। রিজাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো তান ১২ এপ্রিল ম্যানিলায় সিনেট ব্লু রিবন কমিটির কাছে জানিয়েছেন, ব্যাংকের কাছে যে অর্থ রয়েছে, তারা তা ফেরত দেবেন। সূত্র: ব্লুমবার্গ।

/এসএ/বিএ/