যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রায় তিনগুণ

বিশ্বের কোন দেশে স্বাস্থ্যসেবা সবচেয়ে ব্যয়বহুল? এটি এখন প্রায় সবাই জানেন যে, খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই স্বাস্থ্যসেবা বা চিকিৎসা খাতে ব্যয় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু নতুন এক গবেষণা বলছে, মার্কিন চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশনে যেসব ওষুধ লেখেন, সেগুলোর দামও অন্যান্য ধনী দেশগুলোর তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এ খবর জানিয়েছে।

সম্প্রতি র‍্যান্ড কর্পোরেশনের এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে গবেষকরা অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) অধীনে ৩৩টি উচ্চ-আয়ের দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসক্রাইব করা সব ওষুধের দামের তুলনা করেছেন। এখান থেকে পাওয়া ফলাফল ছিল বিস্ময়কর। 

২০২২ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্যান্য উচ্চ-আয়ের দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসক্রাইব করা ওষুধের দাম ২ দশমিক ৭৮ গুণ বেশি। আরও অবাক করা বিষয় হলো-ব্র্যান্ড বা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধের দামের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য আরও বেশি। দেখা গেছে, একই ব্র্যান্ডের বা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধের দাম ওইসব দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ৪ দশমিক ২২ গুণ বেশি। 

অবশ্য নন-ব্রান্ডের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় রয়েছে। অন্যান্য ধনী দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে নন-ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম গড় খরচের মাত্র ৬৭ শতাংশ। তবে চিকিৎসকরা ৯০ শতাংশই নন-ব্র্যান্ডের ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। আর এই প্রেসক্রিপশনের মাত্র ৮ শতাংশ ওষুধ বিক্রি হয়। অন্যদিকে, চিকিৎসকরা মাত্র ৭ শতাংশই ব্র্যান্ডের ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। আর এই প্রেসক্রিপশনের মাত্র ৮৭ শতাংশ ওষুধ বিক্রি হয়।

অলাভজনক গবেষণা সংস্থা র‍্যান্ডের জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ও গবেষণার মূল লেখক অ্যান্ড্রু মুলকাহি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই ফলাফল এটাই প্রমাণ করে যে, প্রেসক্রাইব করা ওষুধের জন্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের গড় মূল্য অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বেশি।’

গবেষক দলটির অনুমান, শুধু ২০২২ সালে ওষুধের জন্য ওইসিডি’র আওতাধীন সব দেশের মোট ব্যয় ছিল ৯৮৯ বিলিয়ন ডলার। এই ব্যয়ের ৬২ শতাংশই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে একই রকম আরেকটি গবেষণা করেছিল। তবে দেখা গেছে, প্রথম গবেষণার পর, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের মধ্যে ওষুধের দামের পার্থক্য ক্রমেই বাড়ছে।