ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ৭ জুলাই ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টায় এটি হতে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপ। সোমবার রাতে হোয়াইট হাউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
এটি হবে ২০২৫ সালে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর নেতানিয়াহুর তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র সফর। ঠিক দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-ইরান ১২ দিনের যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হয়।
মন্ত্রিসভায় নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি ট্রাম্প ছাড়াও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, আলোচনায় গাজা যুদ্ধ, ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত এবং সিরিয়া ইস্যু স্থান পাবে। ট্রাম্প চান গাজা যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং প্রায় দুই বছর ধরে বন্দি থাকা ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্ত হোক।
স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্সমন্ত্রী রন ডারমার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। তবে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় এখনও যুদ্ধ অবসান নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
নেতানিয়াহুর অফিসের এক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার এ নিয়ে আরও একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের চুক্তি হতে পারে।
তবে ইসরায়েল ও হামাস এখনও তাদের নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানালেও ইসরায়েল চাইছে সাময়িক বিরতি। যাতে প্রয়োজনে আবার অভিযান চালানো যায়।
তবু সাম্প্রতিক বক্তব্যে নেতানিয়াহু ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুদ্ধ অবসানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ডারমারের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়েও নেতানিয়াহুর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা চাই কাতার হামাসকে চাপে ফেলুক। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলছি, তারা যেন কাতারকে চাপ দেয়।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, এই যুদ্ধের পরিস্থিতি হৃদয়বিদারক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান এটি দ্রুত শেষ হোক এবং প্রাণহানি বন্ধ হোক।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি যুদ্ধ শেষ করার চাপের পাশাপাশি আরও হামলার আহ্বানের মুখোমুখি হচ্ছেন নেতানিয়াহু। ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ বলেছেন, হামাসের সঙ্গে সমঝোতা ইসরায়েলের জন্য সর্বোচ্চ বিপদ। এখন দরকার দ্রুত ও কঠোর সামরিক অভিযান।
জিম্মিদের মধ্যে ২০ জনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকিদের মৃত বলে মনে করা হচ্ছে। হামাসের কাছে ২০১৪ সালে নিহত এক আইডিএফ সেনার মরদেহও রয়েছে।
৭ জুলাইয়ের বৈঠকে ইরান ও সিরিয়া ইস্যুও আলোচনায় আসবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্য তুলে ধরবেন।