ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছরেরও বেশি সময় পর পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। মস্কোর মদদপুষ্ট ওই অঞ্চলের প্রধান রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে সোমবার জানিয়েছেন, লুহানস্ক এখন পুরোপুরি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এই দাবি সঠিক হলে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে রুশ আক্রমণের পর প্রথম কোনও অঞ্চল রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে যাবে।
লুহানস্কের আয়তন প্রায় ২৬ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে রাশিয়ার হাতে পড়া সবচেয়ে বড় এলাকা।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও এই দাবি নিশ্চিত করেনি এবং ইউক্রেনও তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
ইউক্রেন বারবার বলেছে, লুহানস্কসহ রাশিয়া-অধিকৃত সব অঞ্চলের ওপর মস্কোর দাবি অবৈধ ও ভিত্তিহীন। কিয়েভ সরকার জানিয়েছে, তারা কখনোই এসব অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের গণআন্দোলনে রুশপন্থি সরকার পতনের পর রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে এবং লুহানস্ক ও ডনেস্কে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। পুতিন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা দেন, লুহানস্ক, ডনেস্ক, খেরসন ও জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চল এখন থেকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
তবে পশ্চিমা বিশ্ব এই ঘোষণাকে অবৈধ ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এসব অঞ্চলকে তারা এখনও ইউক্রেনেরই অংশ হিসেবে গণ্য করে আসছে।
বর্তমানে রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্পূর্ণ লুহানস্ক, ৭০ শতাংশের বেশি ডনেস্ক, খেরসন ও জাপোজ্জিয়া অঞ্চলের বিশাল অংশ এবং খারকিভ, সুমি ও ডনিপ্রোপেট্রভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ।
রাশিয়া বলছে, এসব অঞ্চল এখন দেশটির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সেগুলো রাশিয়ার পারমাণবিক নিরাপত্তা ছাতার আওতায় এসেছে।
লুহানস্ক একসময় রুশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। ১৯২০ সালে লাল ফৌজ এটি দখল করে এবং ১৯২২ সালে এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে ইউক্রেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত হয়।
রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, এসব অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার ছিল এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ভূখণ্ড ফের একীভূত করা হয়েছে।