পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতায় দৃঢ় সমর্থন দেওয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার। মঙ্গলবার (২০ মে) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
বেইজিংয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইসহাক দার। বর্তমানে চীন সফরে রয়েছেন তিনি। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সেখানে আলোচনা করছেন দার।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় নেতা পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। লিউ জোর দিয়ে বলেন, ‘অল-ওয়েদার স্ট্র্যাটেজিক কো-অপারেটিভ পার্টনার’ এবং ‘আয়রন-ক্ল্যাড বন্ধু’ হিসেবে চীন সবসময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও পাকিস্তান জানায়, দার সোমবার তিনদিনের সরকারি সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছান। এই সফরটি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পেহেলগাম হামলার পর সামরিক উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং পরে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
৬ ও ৭ মে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাঞ্জাব ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে বোমাবর্ষণ করে, যাতে বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। এর জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। ড্রোন প্রতিহত ও বিমানঘাঁটিতে হামলার পর ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়। ভারত আগ্রাসী অবস্থান বজায় রাখলেও পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছে।
সফরে দার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
দুই দেশই পাকিস্তান-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ পরিসর নিয়ে পর্যালোচনা করবে এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়াবলিতে মতবিনিময় করবে।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিও বেইজিংয়ে অবস্থান করবেন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
চীন সফরের আগে সংবাদমাধ্যমকে দার বলেন, চীন পাকিস্তানের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং উভয় দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।
তিনি আরও বলেন, চীনা নেতৃত্বের সঙ্গে তার বৈঠকে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক ইস্যুগুলোর পাশাপাশি পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়েও আলোচনা হবে।