যুদ্ধে তেল ও গ্যাসের মুনাফা বাড়লো নরওয়ের

ইউরোপের রুশ জ্বালানির বিকল্প খোঁজার কারণে নাটকীয়ভাবে নরওয়ের তেল ও গ্যাসের চাহিদা ও মূল্য বেড়েছে। তেল ও গ্যাস বিক্রি থেকে অর্থ আসতে শুরু করেছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে মুনাফা করছে নরওয়ে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এখবর জানিয়েছে।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউজ মোরাভিয়েস্কি বলেছেন, তেল ও গ্যাস থেকে নরওয়ের বিপুল মুনাফা পরোক্ষভাবে যুদ্ধের লুণ্ঠন।

তিনি নরওয়েকে আহ্বান জানিয়েছেন, মুনাফার অর্থ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, বিশেষ করে ইউক্রেনকে সহযোগিতায় ব্যবহারের জন্য।

গত সপ্তাহে পোলিশ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য অনেক নরওয়েজিয়ানকেও নাড়া দিয়েছে। তারাও প্রশ্ন তুলছেন, ইউক্রেনে আর্থিক সহযোগিতা বাড়িয়ে রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবিলা এবং রুশ জ্বালানি নির্ভরতা কাটাতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে তাদের দেশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছে কিনা।  

মোরাভিয়েস্কি আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বলেছেন, নরওয়ের উচিত বিভিন্ন দেশে তেল ও মুনাফা পাঠানো।

ইউরোপের অন্যতম দেশ নরওয়ে। দেশটির জাতীয় আয়ের ১.০৯ শতাংশ বৈদেশিক উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ রেখেছে। যা বিশ্বের উচ্চ হারের একটি। ইউক্রেনে ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহযোগিতা করেছে দেশটি। তেল ও গ্যাসের মুনাফা বৃদ্ধির কারণে অনেকেই চাইছেন এই অর্থ যুদ্ধের প্রভাব প্রশমনে কাজে লাগানো হোক।

মানবাধিকার গোষ্ঠী নরওয়েজিয়ান হেলসিঙ্কি কমিটির পলিসি ডিরেক্টর বেরিট লিন্ডেম্যান বলেন, জাতিসংঘের বেশিরভাগ সংস্থা ও মানবাধিকার প্রকল্পে অর্থায়ন নাটকীয়ভাবে কর্তন করেছে নরওয়ে। মূলত ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যয় বহনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হেলসিঙ্কি।

 পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মন্তব্যে কিছু যৌক্তিকতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার কথায়, বিষয়টি খারাপ দেখায় যখন আমরা দেশি আয় বেড়েছে আকাশ ছোঁয়া।

দেশটির জ্বালানি জায়ান্ট ইকুইনর। কোম্পানির বেশিরভাগ মালিকানা রাষ্ট্রের। গত বছর একই সময়ের তুলনায় এবার কোম্পানিটির মুনাফা চারগুণ বেশি। এর ফলে সরকার পেট্রোলিয়াম কর্মকাণ্ড থেকে আয়ের পূর্বাভাস পুনর্নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়েছে। সরকারি পূর্বাভাস অনুসারে, এই বছর আয় হতে পারে ৯৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের তুলনায় যা তিনগুণ বেশি।