রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, আলোচনার ভিত্তি হবে ২০২২ সালে প্রস্তুতকৃত কিন্তু পরে পরিত্যক্ত খসড়া চুক্তি এবং ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ডে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণের স্বীকৃতি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার (১১ মে) এক ঘোষণায় পুতিন বলেন, দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা জরুরি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও আলোচনার সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে তিনি বলেছেন, আলোচনার আগে রাশিয়াকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে।
রুশ পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানান, প্রস্তাবিত আলোচনা হবে ২০২২ সালের পরিত্যক্ত খসড়া এবং বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ভূখণ্ডের বাস্তবতার ভিত্তিতে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সর্বাত্মক আগ্রাসনের পর ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বেলারুশে আলোচনার সূচনা হয়। পরে তা ইস্তাম্বুলে স্থানান্তরিত হয়। সেখানে একটি খসড়া চুক্তি গৃহীত হয়েছিল, যা ‘ইস্তাম্বুল ঘোষণা’ নামে পরিচিত।
চুক্তিতে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার অঙ্গীকারসহ স্থায়ী নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের কথা বলেছিল। এর বিনিময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যসহ (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স) কয়েকটি দেশের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছিল।
চুক্তির অধীনে, রাশিয়ার নতুন আগ্রাসনের ক্ষেত্রে এই দেশগুলোকে ইউক্রেনের পক্ষে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হতো। তবে কূটনীতিকদের মতে, এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবিই ছিল আলোচনার সবচেয়ে বড় জটিলতা। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ভবিষ্যতের যেকোনও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় চুক্তিতে অস্বস্তি বোধ করেছিল।
রয়টার্সের তথ্যমতে, ওই খসড়া চুক্তিতে ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির পথ সুগম করার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাশাপাশি রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ওপর সীমা নির্ধারণ এবং রুশ ভাষাভাষীদের বিরুদ্ধে বিভেদমূলক আইন বাতিল করতে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও ২০২২ সালের খসড়াকে ভবিষ্যৎ শান্তি আলোচনার ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।