তুরস্ক-সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। এই বিপর্যয়ের প্রায় তিন সপ্তাহ হলেও, নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি অনেকে। সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাই না হওয়ায়, অনেকের মতো অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন ওমরান আলসওয়েদ ও তার পরিবার।
তুর্কি কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ভূমিকম্পে গৃহহীন প্রায় ২০ লাখ মানুষকে বিভিন্ন স্থানে তাঁবু, কন্টেইনার হোম এবং অন্যান্য সুবিধাগুলোতে রাখা হয়েছে। তবে ২৫ বছরের আলসওয়েড বলেছেন, তার পরিবার এখনও সরকারিভাবে উপকৃত হয়নি।
আলসওয়েড দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের সির্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই আমরা এখানে একটি বাগানে আশ্রয় নিয়েছি।’
আলসওয়েড বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তাঁবু। ১৯ দিন হয়ে গেছে, আমরা এখনও একটি তাঁবু পাইনি। তাঁবু শিবিরে যাওয়ার জন্য আবেদনও করেছি। তারা বলেছে, তাদের হাতে এখন আর তাঁবু নেই।’
রেহানলি শহরের একটি রাস্তার পাশে প্লাস্টিকের পর্দা, কম্বল, ইট এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের কংক্রিটের টুকরো দিয়ে তৈরি ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত এক ডজন শিশুসহ ৬০ জন সিরীয়র সঙ্গে বাস করছেন আলসওয়েড।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) বলছে, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ২১৮ হয়েছে। সিরিয়ায় মৃতদের নিয়ে সে সংখ্যাটা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
এএফএডি জানায়, তুরস্কের ভূমিকম্প অঞ্চলে ৩ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩০টি স্থানে কন্টেইনার হোম বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে ভূমিকম্প অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আলসওয়েড বলেন, ‘আমি অফিসিয়াল ফোন নম্বরে কল করেছি। এএফএডি এবং অন্যান্য সাহায্য গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছে তাঁবু, টিনজাত খাবার, টয়লেট পেপার এবং শিশুদের জন্য কিছু খেলনা চেয়েছি।’
আন্তাকিয়ার বাইরে কিরিখান শহরের রাস্তায় আয়েস নামে এক নারী তার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির পাশে একটি গ্রিনহাউসে অবস্থান করছিলেন। তিনি জানান, সংকটের কারণে কর্তৃপক্ষ তাকে তাঁবু দিতে পারছে না।
আয়েস বলেন, ‘আমরা একটি তাঁবু পাইনি। তবে আমাদের চেয়ে আরও খারাপ অবস্থাইয় আছেন অনেকে। আমি চাই, তারা যেন আগে তাঁবু পায়। আমাদের অন্তত একটি গ্রিনহাউস আছে। বাচ্চাদের নিয়ে এখানে থাকছি। সন্তানদের ঘুমের জন্য ঘর থেকে একটি সোফা নিয়ে এসেছি।’