বোর্ডিংয়ের পর প্রসব ব্যথা শুরু, উড়োজাহাজে সন্তান জন্ম দিলেন নারী

উড়োজাহাজ থেকে চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে নেমে এলো একটি ফুটফুটে নবজাতক। তাকে অভিবাদন জানাতে জানাতে আনন্দ উল্লাস করছেন সহযাত্রীরা। এমন দৃশ্যই দেখা গেছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সাবিহা গোকসেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস এ খবর জানিয়েছে। 

ঘটনাটি চলতি মাসের শুরুর দিকের। তবে মঙ্গলবার ঘটনাটির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক পোস্ট। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সাবিহা গোকসেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্রান্সের মার্সেইয়ের উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো পেগাসাস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। ইতোমধ্যে  ফ্লাইটের সব যাত্রীই উড়োজাহাজে অবস্থান নিয়েছেন। সেই যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী।

উড়োজাহাজ উড়াল দেওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তেই ঘটে নাটকীয় ঘটনা। ওই নারীর প্রসব বেদনা ওঠে। তৎক্ষণাৎ উড়োজাহাজ চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী ডাক্তার ও চিকিৎসাকর্মীরা এসে ওই নারীকে উড়োজাহাজের পিছনে নিয়ে যান। তারপর সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য অস্থায়ী রুম তৈরি করেন। সেখানেই জন্ম নেয় এই শিশু।

ভূমিষ্ঠ শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য উড়োজাহাজের ভেতর থেকে বের করে আনা হয়। তখনই ওই উড়োজাহাজের সহযাত্রীদেরকে অভিবাদন জানাতে দেখা যায়। তারপর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে একটি নিকটস্থ হাসপাতালে দিয়ে যাওয়া হয়।  ওই শিশু ও তার মায়ের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

উড়োজাহাজ চলাচলের সময় চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী কোম্পানি ‘মেডএয়ারের’ মতে, ‘স্কাইবর্ন বেবিজ (ফ্লাইটে সময় জন্ম নেওয়া শিশু) অত্যন্ত বিরল। প্রতি ২৬০ লাখ যাত্রীর মধ্যে একবার এই ধরনের শিশুর জন্ম হয়।

মেডএয়ারের এভিয়েশন হেলথের গ্লোবাল ডিরেক্টর ডা. পাওলো আলভেস বলেন,  ফ্লাইটে শিশুর জন্ম অপ্রত্যাশিত। যদিও এই ডেলিভারির বেশিরভাগই সফল হয়, এর মানে এই না যে, ফ্লাইটে জন্ম নেওয়া নিরাপদ।

কন্ডে নাস্ট ট্রাভেলারের সঙ্গে কথা বলার সময় ডা. আলভেস ফ্লাইটে জন্ম দেওয়ার ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি সন্তান জন্মদানের জন্য ভালো জায়গা না। এখানকার বাতাস খুবই হালকা। শিশুর শ্বাশকষ্ট হতে পারে। জটিলতার কারণে উন্নত চিকিৎসা সেবা নাও পেতে পারে। আর এটি এমন এক জায়গা যেখানে জরুরি অবতরণও করা যায় না।

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের উড়োজাহাজ ভ্রমণ নিয়ে সর্বজনীন কোনও নিয়ম নেই। তবে গর্ভাবস্থা ৩৬তম সপ্তাহে থাকা যাত্রীদের বহন করে না এমিরেটসের এয়ারলাইন্স। কিন্তু ডেল্টা এয়ারলাইন্সে এমন কোনও বিধিনিষেধ নেই। তাদের বিধিমালায় বলা আছে,  ভ্রমণের জন্য চিকিৎসকের ছাড়পত্রের প্রয়োজন না হলে উড়োজাহাজ ভ্রমণে বিধিনিষেধ নেই।

তুরস্কের পেগাসাস এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার ৩৬তম সপ্তাহে থাকা নারীরা উড়োজাহাজ ভ্রমণ করতে পারেন। তবে গর্ভে যমজ শিশু থাকলে ৩২তম সপ্তাহের পর ভ্রমণ করতে পারা যায় না।