হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাহী সংস্থার বিরুদ্ধে তার দেশের সরকার পতনে ষড়যন্ত্র এবং একটি ‘পুতুল সরকার’ প্রতিষ্ঠার অভিযোগ করেছেন। বুধবার সোভিয়েত শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বার্ষিকীতে বুদাপেস্টের মিল্লেনারিস পার্কে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণে এই দাবি করেছেন। তিনি তার এই প্রতিবাদকে ১৯৫৬ সালের সোভিয়েত-বিরোধী বিদ্রোহের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত ১৪ বছর ধরে হাঙ্গেরির ক্ষমতায় আছেন অরবান। বর্তমানে তিনি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। নির্বাচনি জরিপে পিটার মাগিয়ার নেতৃত্বে একটি বিরোধী দলে উত্থান ঘটেছে।
ইইউ নেতাদের সঙ্গে অরবান বারবার বিরোধে জড়িয়েছেন। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ ও অভিবাসন নীতি নিয়ে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে চলতি মাসের শুরুর দিকেও তার সঙ্গে বিতর্ক হয়েছে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি তারা আমাদের ইউক্রেনের যুদ্ধে জড়াতে চায়, আমাদের দেশে অভিবাসীদের চাপিয়ে দিতে চায়। তাদের একটি পুতুল সরকার রয়েছে, একটি দল রয়েছে যা তারা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়।
তিনি বিরোধী নেতা পিটার মাগিয়ারকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে বিদেশিদের সহায়তা চেয়েছেন।
অরবানের বক্তব্যের পরপরই একটি জরিপে দেখা গেছে, মাগিয়ারের নেতৃত্বাধীন তিসা দল ভোটারদের মধ্যে অরবানের ফিদেস পার্টির চেয়ে এগিয়ে গেছে। ২০১০ সালের পর এই প্রথম কোনও বিরোধী দল এমন সাফল্য পেলো।
সংবাদমাধ্যমে জনপ্রিয় মাগিয়ার (৪৩) একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা। গত কয়েক মাসে তিসার সমাবেশগুলোতে বিপুল জনসমাগম আকর্ষণ করেছেন। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। যদিও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে একটি জরিপে দেখা গেছে, মধ্যপন্থি তিসা দলের সমর্থন ভোটারদের মধ্যে ৪২ শতাংশ। আর ফিদেস দলের সমর্থন ৪০ শতাংশ। আরও দুটি সাম্প্রতিক জরিপে ফিদেসের ওপর তিসার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
জরিপের ফলাফল প্রকাশের পর মাগিয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, হাঙ্গেরিয়ানরা বার্তা পাঠিয়েছে, ভিক্টর অরবানের শাসন শেষ।
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে।