জোট সরকার গঠনের পথে জার্মানি

টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা আলোচনার পর জার্মানিতে জোট সরকার গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রধান দুই দল এসপিডি ও আঙ্গেলা ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন ইউনিয়ন শিবির। এসপিডি’র দলীয় সম্মতি পেলেই সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হবে। জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

42100353_303

প্রতিবেদনে বলা হয়, অনিশ্চয়তা কাটিয়ে জার্মানিতে দ্রুত স্থিতিশীল সরকার গঠন করা নিয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দলগুলোর মধ্যে দ্বিধা ছিল। ইউনিয়ন ও এসপিডি শিবিরের আলোচনা দীর্ঘ ও জটিল হয়ে পড়ায় সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয়ও দেখা দিয়েছিল। তবে এখন দুই পক্ষ জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ দুই দলের তিন শীর্ষ নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে এই আভাস দিয়েছেন। তবে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

খবরে আরও বলা হয়, টানা প্রায় এক দিন দর কষাকষির পরও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জোট গঠনের প্রশ্নে ঐকমত্যে আসতে পারেনি জার্মানির দুই রাজনৈতিক শিবির। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চূড়ান্ত ঘোষণার আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে মতবিরোধ দূর না হওয়ায় আলোচনা শেষ হচ্ছিল না। শুক্রবারের মধ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া শেষ করতে প্রবল চাপ বজায় ছিল।

কিছু আর্থিক বিষয় ও শরণার্থী প্রশ্নে এসপিডি ও ইউনিয়ন শিবিরের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।  বিদায়ী সরকার বাজেট ঘাটতি দূর করে নতুন সরকারি ঋণ নেওয়া বন্ধ করতে পেরেছে। ইউনিয়ন শিবির ভবিষ্যতেও এই ভারসাম্য বজায় রেখে সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। কিন্তু এসপিডি দলের বেশ কিছু দাবি মানতে গেলে বাড়তি ব্যয় হতে পারে। দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা গোপনীয়তা বজায় রাখায় আলোচনার খুঁটিনাটি এসব বিষয় জানা যাচ্ছিল না।

ইউনিয়ন শিবির জোট সরকার গঠনে বদ্ধপরিকর হলেও এসপিডি তেমন কোনও লক্ষ্য ছাড়াই আলোচনা শুরু করেছিল। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত মহাজোট গঠন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তবে এবার দলীয় সম্মেলনে সম্মতি পেলেই এসপিডি জোট সরকার গঠনের উদ্যোগ নেবে।

বৃহস্পতিবার এসপিডি, সিডিইউ ও সিএসইউ দলের শীর্ষ ও সংসদীয় নেতারা আলোচনা শুরু করেন। বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে তারা দলীয় বিশেষজ্ঞ ও নেতাদের সঙ্গে পরামর্শও করেছেন। তবে সিডিইউ নেত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও এসপিডি নেতা মার্টিন শুলৎস বৃহস্পতিবার আভাস দিয়েছিলেন যে, চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো কঠিন হবে৷

এখন ঐকমত্য সত্ত্বেও সরকার গঠনের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা বিফল হলে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল গভীর সংকটে পড়তে পারেন। তাকে সংখ্যালঘু সরকার অথবা পুনরায় নির্বাচনের মধ্যে কোনও একটি কঠিন বিকল্প বেছে নিতে হবে। জার্মানিতে দ্রুত স্থিতিশীল সরকার গঠন করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপও রয়েছে।