মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল সিনহার পর এবার বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রচারের উপর ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত কোনও প্রচার করতে পারবেন না তিনি। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি তাকে সতর্কও করেছে নির্বাচন কমিশন।
শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালনা নিয়ে তীব্র মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, ভোটের দিন বুথের কাছে কেউ দুষ্টুমি করলে ফের শীতলকুচির তো ঘটনা ঘটবে। রাজ্য বিজেপি সভাপতির সেই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল।
কমিশন তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ছিল খুবই উত্তেজক এবং প্ররোচনামূলক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সেই কারণেই আদর্শ আচরণ বিধির ধারা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ঠিকই একই কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল সিনহার প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নির্বাচন কমিশন। মমতার একাধিক মন্তব্য নিয়েও কমিশন তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল তিনি উস্কানিমূলক কথা বলছেন। যা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির জন্য বিপজ্জনক এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর সেই সব মন্তব্য খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারও বলেছেন, কমিশন এ সব লোক দেখানো ব্যালেন্স করছে। তিনি ও রাহুল সিনহা এক নন। তাদের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ এক নয়। কমিশনের উচিত অমিত শাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কমিশন একবার অমিত শাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু চলতি নির্বাচনে অমিত শাহ বা নরেন্দ্র মোদির কোনও মন্তব্য নিয়ে বা শব্দ চয়ন নিয়ে এখনও পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে তেমন কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেভাবে দিদি-দিদি বলে সম্মোধন করছেন মোদি, তা নিয়ে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে ভ্যাঙাচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ওই দিদি সম্মোধন বিধিভঙ্গের কোনও ধারায় আওতায় পড়ছে বলে কমিশন মনে করছে না।
শুধু দিলীপ ঘোষ নয়, বিজেপি মুখপাত্র সায়ন্তন বসুকেও নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। তবে গেরুয়া শিবিরের মুখপাত্ররা বলছেন, কমিশনের নির্দেশ বিজেপি মেনে চলবে। সায়ন্তন বলেন,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে অমিত শাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি তুলেছেন তা হাস্যকর। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেও তার মুখের ভাষার যে নমুনা বাংলার মানুষ গত তিন মাস ধরে দেখছেন, তারাই বিচার করতে পারছেন যে কে অশালীন কথা বলছেন, আর কারা শালীনতা ও শিষ্টাচার মেনে চলছেন। সূত্র: দ্য ওয়াল