ওমিক্রন শঙ্কাতেও গঙ্গাস্নানে প্রস্তুত দশ লাখ হিন্দু পুণ্যার্থী

প্রায় দশ লাখ হিন্দু পুণ্যার্থী শুক্র ও শনিবার গঙ্গা নদীতে পবিত্র স্নানে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমূখী থাকার মধ্যেই পুণ্যার্থীরা এই স্নানে অংশ নেবেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার ভারতে নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৩ জন। যা এক মাসের মধ্যে ২০ গুণ বৃদ্ধি। বেশিরভাগ আক্রান্ত বাড়িতেই সুস্থ হয়েছেন এবং গত বছর এপ্রিল ও মে মাসের সংক্রমণের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও ছিল কম। সংক্রমণ বাড়ার কারণে কয়েকটি রাজ্যে নৈশ কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের আশঙ্কায় বেসরকারি অফিস, রেস্তোরাঁ ও বার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই সতর্কতার মধ্যেই কয়েক লাখ হিন্দু পুণ্যার্থী পশ্চিমবঙ্গের একটি দ্বীপে গঙ্গা তীরে জড়ো হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের পর এই পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছেন।

গঙ্গাসাগর মেলা নামে পরিচিত এই ধর্মীয় আয়োজনের দায়িত্বে থাকা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা বলেন, মেলায় জড়ো হওয়া পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৮ থেকে ১০ লাখ হতে পারে। আমরা কোভিড স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, ভীড় যাতে না হয় সেজন্য আমরা ড্রোন নিয়ে পবিত্র পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু সাধুরা স্নান করবেন। আমরা তাদের ঠেকাতে পারব না।

গত বছর উত্তর ভারতে এমনই এক ধর্মীয় আয়োজন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়াতে ভূমিকা রেখেছিল। তখনকার সংক্রমণ ঢেউয়ে লাখো মানুষ আক্রান্ত ও কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন একদল চিকিৎসক কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাদের আশঙ্কার করোনা ভাইরাসের সুপার স্প্রেডার হতে পারে মেলাটি। মঙ্গলবার তাদের আবেদনের রায়ে আদালত বলেছে, সব পুণ্যার্থীর অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করতে হবে।

তবে কীভাবে এত বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরীক্ষা করা সম্ভব তা স্পষ্ট নায়। কিংবা আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন হবে কিনা তাও অস্পষ্ট।

প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মকর সংক্রান্তি পালন করা হয়। ওই দিন হিন্দু পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর গ্রামে জড়ো হন। তারা বিশ্বাস করেন, ওই দিন নদীতে স্নান করলে তাদের এবং তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ মুছে যাবে।

মহামারিতে ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার। সংক্রমিতের সংখ্যায় বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পরই ভারতের অবস্থান।