ভারতের রাজনীতি

মোদিকে চোর বলায় জেল, শহীদের ছেলেকে মীর জাফর বললে নয় কেন: প্রিয়াংকা গান্ধী

মোদিকে চোর বলায় জেল হয় আর শহীদের ছেলেকে মীর জাফর বললে কেন মামলা হয় না...এ প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াংকা গান্ধী। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই (রাহুল গান্ধী) একজন শহীদের সন্তান। আপনি আমার ভাইকে বিশ্বাসঘাতক এবং মীরজাফর বলছেন। আপনি (মোদি) তার মাকে অপমান করেছেন। আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাহুল গান্ধী জানেন না তার মা কে। আপনি প্রতিদিন আমার পরিবারকে অপমান করেন, কিন্তু কোনও মামলা হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনার প্রধানমন্ত্রী ভরা পার্লামেন্টে বলেছেন, কেন এই পরিবার নেহরু নামটি ব্যবহার করে না। তিনি (মোদি) কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুরো পরিবারকে অপমান করেছেন।’

গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিজেপির বেপরোয়া আক্রমণের নেতৃত্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আছেন বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরি পণ্ডিত বংশকেও অপমান করেছেন মোদি’।

রাহুল গান্ধীকে নিয়ে বিজেপির বক্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার দিল্লিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে কংগ্রেস। এতে নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপিকে একহাত নেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে।

রাহুল গান্ধীকে ‘শহীদের সন্তান’ অভিহিত করে তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘বিজেপি প্রতিদিন তাকে (রাহুল) অপমান করে। এমনকি নেহরু-গান্ধী পরিবারকেও তারা রেহাই দেয়নি।’

রাহুল গান্ধীকে সংসদীয় আসন থেকে অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদে রবিবার ভারতজুড়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করছে কংগ্রেস। প্রথমে মহাত্মা গান্ধী স্মৃতিসৌধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে পুলিশ তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেস প্রধান খারগে দিল্লির রাজঘাটের বাইরে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।

 

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অপমান করায় গুজরাট আদালতের দোষী প্রমাণিত হন রাহুল। ওবিসি (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) সম্প্রদায়কে অপমান করার দায়ে কংগ্রেস নেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সাজা পাওয়ায় ভারতের সংবিধান অনুযায়ী এমপি পদ হারান রাহুল।

কংগ্রেস সভাপতি খারগে বলেন, ‘নিরভ মোদি কি ওবিসি? মেহুল চোকসি কি ওবিসি? ললিত মোদি কি ওবিসি? তারা তো পলাতক।’

তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কেবল কালো টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়াদের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। কংগ্রেস আজকের মতো সারা দেশে শত শত বিক্ষোভ করবে। আমরা বাকস্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই করবো। রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সব বিরোধীদলকে ধন্যবাদ জানাই।’

 

 

এ সময় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পি চিদাম্বরম, জয়রাম রমেশ, সালমান খুরশিদ, প্রমোদ তিওয়ারি, অজয় ​​মাকেন, মুকুল ওয়াসনিক ও অধীর রঞ্জন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। যদিও গোটা এলাকায় কঠোর নজরদারিতে রেখেছে দিল্লি পুলিশ। রাজঘাটের আশপাশে বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে তারা।

একদিন আগে রাহুল গান্ধী তার বক্তৃতায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার বক্তৃতায় ভয় পেয়েছিলেন বলে আমাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আমি তার চোখে ভয় দেখেছি। সে কারণেই তারা চান না আমি সংসদে কথা বলি।

 

 

তিনি বলেন, ‘আমার নাম সাভারকার না। আমি একজন গান্ধী। আমি ক্ষমা চাইবো না’।  

গত সপ্তাহে গুজরাটের আদালত রাহুলের জামিন মঞ্জুর করে। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ দিয়ে ৩০ দিনের জন্য সাজা স্থগিত করেন বিচারক। রাহুলের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।

এর পর পর কেরালার ওয়েনাদে রাহুলের নির্বাচনি এলাকা শূন্য ঘোষণা করে লোকসভা। নির্বাচন কমিশন এখন আসনটির জন্য বিশেষ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি