বাংলাদেশিদের নিয়ে ‘ওরশ স্পেশাল’ ট্রেন মেদিনীপুরে

সুফি-সাধক হজরত সৈয়দ মুরশেদ আলি আলকাদেরি আল বাগদাদি, যিনি ‘মওলা পাক’ নামেও পরিচিত। তার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ভারতের মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে চলছে ‘১১৬তম আন্তর্জাতিক ওরশ শরীফ’। ওরশে যোগ দিতে বাংলাদেশের রাজবাড়ী থেকে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে সরাসরি এলো বিশেষ ট্রেন। নারী, শিশু-সহ ২ হাজার ২৫৬ জন ভক্ত নিয়ে মেদিনীপুর শহরে পৌঁছেছে বাংলাদেশের বিশেষ ট্রেন।

গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া রাজবাড়ীর উদ্যোগে ২২টি বগিতে ২ হাজার ১০০ ওরশ যাত্রী স্পেশাল ট্রেনে ভারতের মেদিনীপুরে যাত্রা শুরু করে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৫টা নাগাদ মেদিনীপুর স্টেশনে প্রবেশ করে এই ট্রেনটি। মেদিনীপুর স্টেশনে পৌঁছতেই মেদিনীপুর পুরসভার পক্ষ থেকে তাদের স্বাগত জানানো হয়। ফুল দিয়ে যাত্রীদের স্বাগত জানান মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান।

আয়োজকরা জানান, ‘মওলা পাক’ কাদেরিয়া তরিকার বড় পীর সাহেব গওসুল আজম হজরত সৈয়দ শাহ আব্দুল কাদের জিলানির ২৩তম বংশধর ৪ ফাল্গুন প্রয়াত হন। ওই দিনটিতে দেশ-বিদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ওরশ উৎসবে তাদের স্মরণ করেন। বর্তমানে এই তরিকার সাজ্জাদানশীন মওলা পাকের স্থলাভিষিক্ত হজরত সৈয়দ শাহ ইয়াসুব আলি আল কাদেরি আল বাগদাদী পাকের পরিচালনায় ও তত্ত্বাবধানে এবার এই ওরশ উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য দেশে থেকেও লক্ষাধিক মুসলমান এই উপলক্ষে মেদিনীপুর শহরের মির্জাবাজার এলাকাতে আসেন।

বাংলাদেশ থেকে মুসলমানদের এই ওরশে পৌঁছে দিতে ১৯৫৩ সাল থেকে এই বিশেষ ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়। করোনার কারণে ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই বিশেষ ট্রেন মেদিনীপুরে আসতে পারেনি। সেক্ষেত্রে গত দুবছর এই উৎসবের বহর অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছিল। তবে এবছর আবারও স্বরূপে ফিরেছে এই বিশেষ ট্রেন। শুক্রবার ২৪ কামরার এই বিশেষ ট্রেন দেখার জন্য উৎসাহ ছিল ভারতবাসীদের মধ্যেও। এদিন মেদিনীপুরের মাটি ছুঁতেই ভারতীয় রেলওয়ে ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের ভক্তরা।

মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদ ‘মওল পাকের’ মাজার শরিফে, তার বাসস্থান দায়রাপাকে ও সাধনা স্থল ‘কাঁসাই’ নদীর তীরে অবস্থিত ‘স্ত্রীগঞ্জ পার্কেও’ ভক্তদের ঢল নেমেছে মঙ্গলবার থেকেই। মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সাবেক সম্পাদক ও মেলা কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘এবারও বাংলাদেশের রাজবাড়ী থেকে ট্রেনে করে তীর্থযাত্রীরা এসেছেন। তাছাড়া অনেক তীর্থযাত্রী বিমানে বা গাড়িতে করে পৌঁছেছেন। যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে নজরদারি থাকে সবার।’

উৎসব শেষে বিশেষ ট্রেনটি রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে ফিরে আসার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।

আরও পড়ুন:

মেদিনীপুরে ওরশ শরীফ: রাজবাড়ী থেকে ভারতে যাবে স্পেশাল ট্রেন 
রাজবাড়ী থেকে ভারত যাচ্ছে ওরশ স্পেশাল ট্রেন