বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ও কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর দুজন মার্কিন নাগরিককে শনিবার (৩ মে) ভারতের মিজোরাম রাজ্যের লেংপুই বিমানবন্দরে আটকের পর ‘ডিপোর্ট’ করা হয়েছে। ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলোর দাবি, এই দুই ব্যক্তি মিজোরামে অবস্থানরত বাংলাদেশের কুকি-চিন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে তাদের কাছে আগাম খবর ছিল।
শুক্রবার (২ মে) দুপুরে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে এই দুজন বিদেশি নাগরিক মিজোরামের রাজধানী আইজলে এসে নামলে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন।
ভারতে পর্যটক ভিসায় আসা এই দুই ব্যক্তি রাজ্যে তাদের গতিবিধি নিয়ে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। ফলে বিমানবন্দরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরদিন অন্য একটি বিমানে তাদের ফেরত পাঠিয়ে নিজ দেশে ডিপোর্ট করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানানো হয়েছে, কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির পলাতক নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা নাথান লানচেও বমের সঙ্গে এই দুজন মার্কিন নাগরিকের গোপন বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। নাথান লানচেও বম এখন ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’ রয়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন তা জানা নেই নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর।
উত্তর-পূর্ব ভারতের গোয়েন্দা সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, পর্যটক ভিসা নিয়ে অন্তত চার জন মার্কিন নাগরিক মে মাসের গোড়ায় আইজলে আসছেন এবং কুকি-চিন নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করবেন বলে তারা আগেই আভাস পেয়েছিলেন। এই চার জনের মধ্যে দুজনের নাম হলো ‘চেকুন’ ও ‘সারন’। যদিও বাকি দুজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
আইজল এয়ারপোর্টে এসে নামার পর তারা সরাসরি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী লংৎলাই জেলায় যাবেন এবং বম জাতিগোষ্ঠীর শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করবেন বলেও তাদের কাছে খবর ছিল। এই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই ওই দুই মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক বছর আগে যখন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট গড়ে তোলা হয়, তখন ওই জাতিগোষ্ঠীর সদস্য দুজন মার্কিন নাগরিক তাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং টাকাপয়সা দিয়ে ও তহবিল সংগ্রহ করে প্রচুর সাহায্য করেছিলেন। তবে মিজোরাম থেকে যে দুজনকে এই সপ্তাহান্তে ডিপোর্ট করা হয়েছে, তারা সেই একই ব্যক্তি কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।