সিরিয়ায় ৪ দিনের দাবানলে ছাইয়ে পরিণত ১০ হাজার হেক্টর বনভূমি

সিরিয়ার লাটাকিয়া প্রদেশে দাবানলের চতুর্থ দিনে পরিস্থিতি ‘ধ্বংসাত্মক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে, প্রায় ১০ হাজার হেক্টর বনভূমি এবং জলপাই বাগান ছাইয়ে পরিণত হয়েছে। আগুন নেভাতে সিরিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশী জর্ডান ও তুরস্ক। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

লাটাকিয়ার রাবিয়া অঞ্চল থেকে এএফপির এক প্রতিবেদক বলেছেন, গ্রামাঞ্চলের ঘন বনভূমিতে আগুন ড়িয়ে পড়েছে এবং আশপাশের বাড়িঘর ঝুঁকিতে পড়েছে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে কালো ধোঁয়া।

সিরিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী রায়েদ আল-সালেহ বলেন, ২৮টি স্থানে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে কয়েক লাখ গাছ পুড়ে গেছে। এটি একটি প্রকৃত পরিবেশগত বিপর্যয়।

তীব্র তাপমাত্রা, শক্তিশালী বাতাস, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল এবং যুদ্ধের অবশিষ্ট বিস্ফোরক—সব মিলিয়ে আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানবাহিনী হেলিকপ্টারে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

দাবানল মোকাবিলায় রবিবার সকালে জর্ডান থেকে বিশেষায়িত দমকল বাহিনী সিরিয়ায় প্রবেশ করে। এর আগের দিনই তুরস্ক থেকে সহায়তা আসে। সিরিয়ার নাগরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ৮০টির বেশি দমকল দল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও বিদেশি দমকল বিমানও রয়েছে।

জাতিসংঘের সিরিয়াবিষয়ক উপদূত নাজাত রোচদি এক্স (টুইটার)-এ এক বিবৃতিতে বলেন, সিরিয়ার এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো দরকার।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যাডাম আবদেলমৌলা বলেছেন, জাতিসংঘের জরুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ও জরুরি চাহিদা নির্ধারণে কাজ করছে।

দীর্ঘ এক দশকের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার অর্থনীতি, অবকাঠামো ও জনসেবা এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। তার ওপর যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। বিশ্বজুড়ে তাপদাহ ও খরার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সিরিয়াতেও দাবানলের প্রকোপ তীব্র হয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) গত মাসে জানিয়েছিল, গত ৬০ বছরে সিরিয়ায় এমন খারাপ আবহাওয়া দেখা যায়নি।