গাজার ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের গোপন আলোচনা

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তৃতীয় দেশে স্থানান্তর নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আলোচনা আরও এক ধাপ এগিয়েছে। তবে কোন দেশগুলো এই পুনর্বাসনে অংশ নিতে পারে, সে বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা মুখ খুলছেন না। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।

ওয়াশিংটনে এক যৌথ বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা এমন দেশগুলো খুঁজছি, যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ভালো ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউজ বৈঠকের শুরুতেই তিনি এ কথা বলেন।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে এমন দেশগুলোর সন্ধান পাওয়া যায় যারা সবসময় বলে এসেছে, তারা ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালো কিছু চায়। আমি মনে করি আমরা এমন কয়েকটি দেশের কাছাকাছি চলে এসেছি।

তবে এসব দেশের নাম কিংবা অঞ্চল প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, এসব বিষয় এখনও ভাবনায় আছে বা আলোচনার অংশমাত্র।

তিনি আরও বলেন, গাজা এখন এমন এক পরিবেশ, যেখানে কেউ শান্তিতে বা নিরাপদে থাকতে পারে না। এটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও উল্লেখ করেছেন। ফলে পুনর্গঠনের আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই মুখ্য।

তবে এসব আলোচনার ফলাফল কী হবে—তা স্পষ্ট করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

ব্রুস বলেন, মাত্র পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই কত কিছু বদলে গেছে। এটা আমরা নিজেরাই অবাক হয়ে লক্ষ করছি।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, এটা কেবল অস্ত্রবিরতির মুহূর্ত নয়, বরং দৃষ্টিভঙ্গির বদল ও প্রত্যাশার মধ্যেও একটি বড় পরিবর্তন।

ব্রুস বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোরও (মধ্যপ্রাচ্যের) যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে যেন এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ হয়। তারা চায় পরিস্থিতির অবসান হোক।

তবে এখন পর্যন্ত কোনও দেশ ফিলিস্তিনিদের গ্রহণে সম্মত হয়েছে কি না, অথবা কোনও চূড়ান্ত প্রস্তাব এসেছে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখা যাক, কারা অংশ নেয় এবং কীভাবে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা যায়।

এ বছরের শুরুতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের কথা তুলে ধরে এবং গাজা উপত্যকাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর ধারণা দেন।

তবে ফিলিস্তিনিরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের ভূমি ছাড়ার কথা দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানায়।