ব্রেক্সিটের বিষয়ে আবার গণভোট চান লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ব্রেক্সিটের বিষয়ে আবার গণভোট চান। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট কার্যকরের শর্ত চূড়ান্ত করতে চাইছেন তাতে যুক্তরাজ্যের ক্ষতি করবে বলে মনে করেন তিনি। তাই ব্রিটিশ জনগণ আসলেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে চায় কি না তা বোঝার জন্য ব্রেক্সিটের বিষয়ে মেয়রের নতুন গণভোটের এই দাবি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আগামী মার্চের ২৯ তারিখে যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে রয়েছে। এর মধ্যেই ইইউয়ের সঙ্গে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের শর্ত চূড়ান্ত করতে হবে যুক্তরাজ্যকে। কিন্তু দেশটির রাজনীতিবিদ-পেশাজীবীদের অনেকেই ইইউ ত্যাগের বিষয়ে আরেকটি গণভোটের দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার মুখ খুললেন সাদিক খানও।s3.reutersmedia.net

ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে ২০১৬ সালের জুন মাসে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গণভোটে ইইউ ত্যাগের পক্ষে রায় দেয় ব্রিটিশ ভোটাররা। এর প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া থেরেসা মে কী কী শর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাবে তা নির্ধারণ করতে গিয়ে ইইউয়ের সঙ্গে দর কষাকষি চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিরুদ্ধে ইইউয়ের অনেক শর্ত বিনা বাধায় মেনে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। তার পরপর ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রস্তাবের শর্তের সঙ্গে একমত হতে না পেরে পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। নতুন জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ আসনে ব্রেক্সিটপন্থীরা তাদের অবস্থান পাল্টেছেন।

গণভোটের দাবি উঠলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে নতুন গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তার ভাষ্য, সংসদ সদস্যরা ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে চূড়ান্ত করা শর্তগুলো গ্রহণযোগ্য কি না সে বিষয়ে তো ভোট দিতেই পারবেন।

সানডে অবজারভার পত্রিকায় প্রকাশিত তার নিবন্ধে রবিবার সাদিক খান লিখেছেন, যুক্তরাজ্য এখন এমন পরিস্থিতিতে আছে যে হয় তাকে একটা খারাপ চুক্তি মেনে নিতে হবে আর না হয় কোনও চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগ করতে হবে। দুইটি সম্ভাবনার দুইটি ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রেক্সিট সফলভাবে বাস্তবায়ন না হলে যুক্তরাজ্যের জনগণের জীবিকা, জীবনযাপনের মান ও অর্থনীতির ওপর এত গুরুতর প্রভাব পড়বে যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ জনগণের পাওয়া উচিত।

রয়টার্স লিখেছে, লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা। নতুন গণভোটের পক্ষে বক্তব্য রাখায় এ বিষয়ে চাপ বাড়বে লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিনের ওপর। কারণ লেবার পার্টি বর্তমানে নতুন গণভোটের পক্ষে নয়। সপ্তাহখানেকের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য লেবার পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে এ বিষয়ে তাকে বক্তব্য দিতে হতে পারে। দ্বিতীয় গণভোটকে ‘জনগণের ভোট’ আখ্যা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এর পক্ষের অ্যাক্টিভিস্টরা। এটি লেবার পার্টির আনুষ্ঠানিক অবস্থা না হলেও দলের অর্থবিষয়ক মুখপাত্র জন ম্যাকডোনেল গত মাসে আরেকটি গণভোট অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন, তিনি কোনও সম্ভাবনাকেই বাতিল করে দিচ্ছেন না।