মহাকাশে বেজোস বনাম ব্র্যানসন, বিলিয়নিয়ারদের নতুন যুদ্ধক্ষেত্র

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস এবং ফোর্বসের বিশ্বের বিলিয়নিয়ার তালিকায় ৫৮৯তম স্থানে থাকা রিচার্ড ব্র্যানসন, এই মাসে মহাকাশে গমন করবেন। এর মধ্য দিয়ে মানুষের জন্য নতুন একটি অধ্যায়ের যাত্রা শুরু হবে- বেসরকারি উদ্যোগে মহাকাশ ভ্রমণ।

৬০ বছর আছে মহাকাশে মানুষের পদার্পণে নতুন এক যুগের সূচনা হয়েছিল। ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল ভস্টক ১ মহাকাশযানে সোভিয়েত মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারি পৃথিবীকে চক্কর দেওয়ার ছয় দশক পর বেসামরিক নাগরিক সেখানে গমন করতে যাচ্ছেন।

জেফ বেজোস ও রিচার্ড ব্র্যানসনের নিজেদের রকেট কোম্পানি রয়েছে। আর এতে করে তাদের জন্য লাভজনক মহাকাশ পর্যটন খাত অপেক্ষা করছে।

ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিক রবিবার পৃথিবী থেকে ৮০ কিলোমিটার ওপর দিয়ে উড়বে। যে উচ্চতাকে মহাকাশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বেজোসের ব্লু অরিজিন ২০ জুলাই পৃথিবীর ১০০ কিলোমিটার ওপর দিয়ে উড়বে। এই উচ্চতা কারমান লাইন হিসেবে পরিচিত।

ব্র্যানসন বলেছেন, বেজোসের পরিকল্পিত মহাকাশ সফরের আগে মহাকাশে তিনি আরেকটি সফর আয়োজন করবেন। এটি হবে কারমান লাইনে।

এর ফলে ব্লু অরিজিন ও ভার্জিন গ্যালাকটিকের সিইওদের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। ব্লু অরিজিনের সিইও বব স্মিথ ব্র্যানসনের পরিকল্পনাকে খুব ভিন্ন অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ তারা কারমান লাইনের উপর দিয়ে উড়বেন না। আর ভার্জিন গ্যালাকটিকের সিইও মাইকেল কলগ্ল্যাজিয়ের বলেছেন, আমরা নভোচারী লাইনে যাচ্ছি। আমরাই একমাত্র বাণিজ্যিক কোম্পানি যারা বেসরকারি নভোচারীদের নিয়ে মহাকাশে উড়েছে।

মূলত এই বিরোধ পৃথিবী থেকে কতটা উচ্চতায় মহাকাশ শুরু হয়েছে তা নিয়ে। পৃথিবী থেকে তা ৮০ কিলোমিটার নাকি ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায়। এছাড়া ব্র্যানসনের ফ্লাইট হবে দীর্ঘ কিন্তু বেজোসেরটা হবে উঁচুতে।

৯ জুলাই বেজোসের রকেট কোম্পানি টুইটারে লিখেছে, বিশ্বের মাত্র ৪ শতাংশ মহাকাশ শুরুর উচ্চতা ৮০ কিলোমিটার মনে করে। আমাদের নিউ শেফার্ড উভয় সীমার ওপর দিয়ে উড়বে। ব্লু অরিজিনে মহাকাশে ভ্রমণের অনেক সুবিধার এটি একটি।

ব্লু অরিজিন বনাম ভার্জিন গ্যালাকটিক

মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণে দুই বিলিয়নিয়ারের দুই দশকের বেশি সময় লেগেছে। ব্লু অরিজিন গঠিত হয় ২০০০ সালে এবং চার বছর পর গড়ে তোলা হয় ভার্জিন গ্যালাকটিক। ব্র্যানসনের কোম্পানি উপ-কক্ষপথে মানুষ নিয়ে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। আর বেজোসের কোম্পানি ১৫ বার মহাকাশে গেলেও কখনও মানুষ নিয়ে যায়নি।

ভার্জিন গ্যালাকটিকের মহাকাশযান ভার্জিন স্পেসশিপ ইউনিটিতে দু’জন পাইলট ও ছয়জন পর্যটক যেতে পারবে প্রতিবার। ভার্জিন স্পেসশিপ ইউনিটির সঙ্গে হোয়াইটনাইটটু নামের একটি ক্যারিয়ার স্পেসক্রাফটও যুক্ত থাকবে।

অন্যদিকে ব্লু অরিজিনের জন্য রকেট আকারের ৬০ ফুট লম্বা মহাকাশযান নিউ শেফার্ড তৈরি করছে মার্কিন দুই প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স ও বোয়িং। এতেও যেতে পারবেন ছয়জন যাত্রী। সূত্র: টাইমস নাউ নিউজ