তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি আলোচনায় রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন: ট্রাম্প

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবারের (১৯ মে) এই ফোনালাপের পর ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনায় বসতে রাজি রাশিয়া এবং ইউক্রেন। তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। পোন্টে তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির জন্য শিগগিরই ইউক্রেন ও রাশিয়া আলোচনা শুরু করবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো তারা এই যুদ্ধে ইতি টানবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন, মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে ইউরোপের নতুন নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিতে তিনি প্রস্তুত নন।

পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তিনি এই পরিকল্পনার কথা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের নেতাদের একটি যৌথ কলে জানিয়ে দিয়েছেন।

শান্তিচুক্তি নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই আলোচনাকে কার্যকর বলে মনে করছেন তিনি।

ট্রাম্প-পুতিনের এই ফোনালাপের এক দিন আগে শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সরাসরি বৈঠক করেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। সেখানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনও অগ্রগতি না হলেও এক হাজার করে বন্দী বিনিময়ে রাজি হয় দুই পক্ষ।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। তারপরও সোমবারের আলোচনাগুলো প্রত্যাশিত বড় ধরনের অগ্রগতি এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ এক্সে দেওয়া  পোস্টে বলেন, ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে ব্রিফ করার পর ইউরোপীয় নেতারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে ট্রাম্প সেই পথে হাঁটবেন বলে মনে হয়নি। মস্কোর ওপর শান্তিচুক্তির জন্য চাপ দিতে তিনি কেন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি। কারণ ট্রাম্প মনে করেন, ‘ কিছু একটা অর্জনের সুযোগ রয়েছে, আর নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি আরও খারাপও হতে পারে। তবে এমন একটা সময় আসতে পারে, যখন সেটা করতেই হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এই প্রক্রিয়া ছড়ে দিতে পারেন উল্লেখ করে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, অগ্রগতি না হলে ‘আমি সরে দাঁড়াবো। কারণ এটা আমার যুদ্ধ নয়।’

গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রতিনিধিরা আলাদাভাবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছেন। এতে তিন পক্ষই সাময়িক বিভিন্ন চুক্তি, কৃষ্ণসাগরে নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা না চালানোর বিষয়ে একমত হয়েছে।

তবে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্তগুলো নিয়ে এখনও একমত হতে পারেনি দুই দেশ।