লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম আরও বেগবান করার জন্য ৯টি নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান সই করা এই পরিপত্র গত ৫ মে জারি করা হয়।
এতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষায় ইনজুরি রেজিস্টারের পরিবর্তে জেনারেল রেজিস্টারে নিবন্ধন করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টে ‘পুলিশ সিল’ দেওয়া যাবে না। পুলিশ বিভাগকে জানানোর জন্য অনুমোদিত নির্ধারিত ফর্ম ব্যবহার করতে হবে। ফোকাল পার্সনরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক ফোকাল পার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন– সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বা গাইনি অ্যান্ড অবস্ট্রেটিক্স বা পেডিয়েট্রিক সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন; জেলা সদর হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার; ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) কো-অর্ডিনেটর, ওসিসি; মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে (এমসিডাব্লিউসি) মেডিক্যাল অফিসার (ক্লিনিক); মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে (এমসিএইচটিআই) আজিমপুর বা মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (এমএফএসটিসি) বা মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, লালকুঠি, মিরপুরে জুনিয়র বা সিনিয়র কনসালটেন্ট, শিশু বা গাইনি; বেসরকারি হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একজন ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করবেন।
এতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রণীত ও হাইকোর্ট বিভাগ অনুমোদিত মেডিক্যাল রিপোর্ট অ্যান্ড এক্সামিনেশন ফর্ম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন সব সরকারি ও সরকার স্বীকৃত বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রসহ এমসিডাব্লিউসি, ওসিসি, এমসিএইচটিআই, এমএসএসটিসি, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হলে সার্ভাইভারের রেফারেল স্লিপ বা ছাড়পত্রের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি অথবা আউটডোর টিকিট সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ মেডিক্যাল রিপোর্ট অ্যান্ড এক্সামিনেশন ফরম বিবেচনায় নিতে হবে। সার্ভাইভারের ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনের কপি পুলিশ বিভাগ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের প্রধান বরাবর পাঠাবে। বয়স নির্ধারণে রেডিওলজিক্যাল ও অন্যান্য পরীক্ষার জন্য ব্যক্তির ছবি সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক সত্যায়ন করবেন।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, সহিংসতার শিকার ব্যক্তি আইনি প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হতে রাজি না হলে মেডিকোলিগ্যাল পরীক্ষার অংশ হিসেবে সংরক্ষিত বা সংগৃহীত নমুনা তিন মাস পর বিনষ্ট করা হবে। নমুনা বিনষ্ট করার তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে ফরেনসিক নমুনা বিনষ্টকরণ রেজিস্টারে। নির্ধারিত নমুনা বিনষ্টকরণ কমিটির মাধ্যমে তা বিনষ্ট করতে হবে। সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক সাক্ষীরা ‘অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের’ মাধ্যমে সাক্ষ্য দিতে পারবেন। সহিংসতার শিকার ব্যক্তির যথোপযুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সমন্বয় সভার আলোচ্যসূচিতে নিয়মিতভাবে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।